এক টুকরো চোখের জল! পর্ব-০৫

গল্পঃ #এক_টুকরো_চোখের_জল
  (পর্ব ৫)
-এই রিফাত কোথায় তুই? (হাওয়া)
-কেন কি হয়েছে? (রিফাত)
-যা বলছি তার উত্তর দে আগে,
-বন্ধুদের সঙ্গে আছি।
-এতো রাত্রে বন্ধুদের সঙ্গে কি করছিস'টা কি। ঘরে একটা বউ আছে। তার কি খবর রাখিস?
-হা'হা তুই আমার বউ,
-না,
-তাহলে বলিস কেন?
-এতো কথা বলতে পারবো না। বাসায় তারাতাড়ি আয় বলছি।
-না
-কেন আসবি না?
হাওয়া আর কিছু বলার আগেই রিফাত কলটা কেঁটে দেয়। আজকে বিকেল থেকে রাত্র এগারোটা বেজে গেছে। তবুও রিফাত বাড়িতে ফিরেনি। তাই হাওয়া চিন্তিত হয়ে যায়। হাওয়া রিফাতকে ফোন করে, বলে কোথায় আছিস। তবে রিফাত উত্তর দেয়না। এদিকে হাওয়া বারাবার ফোন দিয়ে যাচ্ছে। তবুও রিফাত ফোন তুলছে না।
হাওয়া রিফাতের ফোনে একটা এসএমএস দেয়। রিফাত ফোনটা তুলে দেখে।
)-এই দেখ, তুই আমার উপর রাগ করে আছিস ঠিক আছে। তবে এমন করছিস কেন বল। মা-বাবা তোর কথা বলছিল। আমি মিথ্যে বলে তাদের ঘরে পাঠিয়ে দিয়েছি। এতোক্ষণে হয়তো মা-বাবা দুজনে ঘুমিয়ে পরেছে। প্লিজ আর রাগ করিস না। তুই তো আমার বেস্টফেন্ড ছিলি তাইনা বল। তবে এমন করছিস কেন বল। প্লিজ রাগ করে থাকিস'না। বাড়িতে ফিরে আয়,
রিফাত এসএমএসটা দেখে। আবার ফোনটা পকেটে রেখে দেয়। আর কান্না করতে থাকে।
)- আমি কেন কান্না করছি। যাকে পাবোনা তবুও কেন তার মায়ায় পরছি সারাক্ষণ। তার জন্য কেন কান্না করছি।
ওর জন্য কেন নিজেকে কষ্ট দিচ্ছি।) রিফাত কথা গুলো বলে, কান্না শুরু করে দেয়। এক টুকরো চোখের জল মিলিয়ে হাজার চোখের জল ঝরিয়ে ফেলে ছেলেটা।
রিফাতের সঙ্গে আজকে কেউ নেই। একটা গাছের নিচে বসে আছে রিফাত। একটা সিগারেটের পেকেট কিনেছে। তবে খেতে পারেনি। মনেই ছিলো না ছেলেটার।
রিফাত আর কোনোকিছু না ভেবে বাড়ির দিকে রওনা দিয়ে দেয়। বাড়ির দরজাটায় এসে বেল বাজাতেই, হাওয়া হাজির। হাওয়া দরজাটা খুলে দেয়। আর হাজার প্রশ্ন করতে থাকে।
-এই, এতো রাত্রে কোথায় ছিলি। আর ফোন ধরছিলিস না কেন? আমার কতো চিন্তা হচ্ছিলো যানিস? কতবার ফোন দিয়েছি। একবার তো বলতে পারতিস কোথায় আছিস। ওই কথা বলছিস না কেন?
রিফাত কোনো কথা না বলে নিজের রুমে দিকে চলে যায়। এদিকে হাওয়া রিফাতের পিছন পিছন আসতে থাকে। রুমে ডুকে আবার প্রশ্ন করতে থাকে হাওয়া।
-রিফাত কোথায় ছিলিস বলছিস না কেন?
-যেখানে আর' ছিলাম এখন তো এসেছি। এতো কথা বলিস কেন?
হাওয়া এবার মুখ পাকিয়ে রিফাতকে বলতে থাকে।
-রিফাত আমার উপর রেগে আছিস তাই না। তবে কেন রেগে আছিস বলবি প্লিজ। আমি তো অন্যকাউকে ভালোবাসি, জোর করে কি আর ভালোবাসা পাওয়া যায় বল। আজকে আমাকে থাপ্পড় দিয়েছিস না। আমি কিন্তু একদমি রাগ করেনি। দেখ তোর হাতের পাঁচ আঙুলের ছ্যাপ আমার গালে উঠে আছে। (কথাগুলো বলে হাওয়া হিহি করে হেঁসে উঠে।)
রিফাত হাওয়ার দিকে তাকিয়ে দেখে। হাওয়ার গালে সত্যি দাগ হয়ে আছে।
একটু জোরে মিরেছিলো রিফাত।
রিফাত হাওয়ার কছে গিয়ে বলে উঠে।
-সরি,
-আর সরি বলতে হবে না।
চল ভাত খেয়ে নিবি।
-তুই খেয়েছিস?
-না
-কেন?
-এমনি ভালো লাগছিলোনা তাই।
-ওহ আচ্ছা
-হুম
-আচ্ছা পেত্নী একটা কথা বলি।
-হ্যাঁ বল।
-না থাক,
হাওয়া এবার রিফাতের পেন্টের পকেটের দিকে খেয়াল করে। সিগারেটের পেকেটা বেশ বুঝা যাচ্ছে। হাওয়া এক টানে সিগারেটে পেকেটটা বের করে বলে উঠে।
-এই এগুলার মানে কি,
-,,,,,,,,
-তুই তো এমন ছিলিস না। কেন রে, এমন হলি কেন বল,
-,,,,,,,,,,,
-কথা বলছিস না কেন? তুই তো এমন ছিলিস না। আমি তোকে মেনে নেয়নি তাই নিজেকে শেষ করে দিচ্ছিস।
এই আমার বেস্টফ্রেন্ড যাকে আমি চোখ বন্ধ করে বিশ্বাস করি।
-সরি আর খাবো না।
-ঠিক আছে।
-একটা কথা বলি হাওয়া।
-হ্যাঁ বল
-আমি তোকে অনেক ভালোবাসি'রে।
-আমিও বাসি। প্রেমিক হিসেবে না। বন্ধু হিসেবে অনেক ভালোবাসি। অনেক বিশ্বাস করি।
-হু
-আমাকে প্রমিজ কর, আর কক্ষণো এইসব ছাইপাশ খাবিনা।
-আচ্ছা পেত্নী,
-বান্দর একটা।
-পেত্নী,
-আচ্ছা আমি পেত্নী, এবার মেঝেতে বস ভাত খেয়ে নিবি।
-হু
রিফাত মেঝেতে বসে পরে। এদিকে হাওয়া রান্নাঘর থেকে দুইটা প্লেটে করে ভাত আর তরকারি নিয়ে আসে। হাওয়া মেঝেতে বসে পরে। রিফাতের সঙ্গে,
-এই খেয়ে নে।
হাওয়া নিজের হাত দিয়ে। মাছের কাঁটা গুলো তুলে ফেলছে। আর রিফাত ভাত খাচ্ছে। হাওয়া রিফাতের দিকে তাকিয়ে আছে। আর মনে মনে ভাবছে' পাগল ছেলে একটা।
ভাত খাওয়া শেষে। দু'জনে ঘুমিয়ে পরে। ফজরের আজানের আওয়াজে হাওয়ার ঘুম ভেঙে যায়। রিফাতকে ডাকতে শুরু করে।
-এই রিফাত উঠ বলছি।
-হু
-নামাজ পড়তে যাবি না।
-হু
-তাহলে উঠ বলছি।
হাওয়া অনেকক্ষণ থেকে রিফাতকে ডাকতে থাকে। অবশেষে রিফাত ঘুম থেকে উঠে। ওজু করে মসজিদে যায় রিফাত। রিফাত মুনাজাতে পরে কান্না করতে থাকে।
আল্লাহ তুমি আমায়, হওয়ার মায়ায়
আর ফেলোনা দয়া করে।
(চলবে?)
এক টুকরো চোখের জল! পর্ব-০৫ এক টুকরো চোখের জল! পর্ব-০৫ Reviewed by গল্প প্রেমিক on 12:55 PM Rating: 5

No comments

হৃদয়স্পর্শী গল্প

হৃদয়স্পর্শী গল্প