এক টুকরো চোখের জল! পর্ব-০৬

গল্পঃ #এক_টুকরো_চোখের_জল
(পর্ব-৬)
রিফাত নামাজ শেষে বাড়ি ফিরে আসে। রুমে ডুকে দেখে, হাওয়া গোসল করে চুল গুলো মোছাও করছে। রিফাত হাওয়ার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। হাওয়া রিফাতকে দেখে বলে উঠে!!
-রিফাত কখন আসলি?
-এই তো এখন,
-আচ্ছা তুই রুমে আয়, আমি চা-বানিয়ে আনছি।
-তুই চা-বানাতে যানিস?
-হুম যানি তো।
-আচ্ছা, তাহলে বানিয়ে নিয়ে আয়।
-আচ্ছা,
-আর শোন,
-হ্যাঁ বল,
-রান্নাঘর চিনিস তো?
-হুম সকালে দেখে এসেছি।
-আচ্ছা, আমার জন্য চা
বানিয়ে নিয়ে আয়।
হাওয়া মিস্টি হেঁসে রুম থেকে বের হয়ে চলে যায়। এদিকে রিফাত, মাথার টুপিটা খুলে আলমারিতে রেখে দেয়। রিফাত পড়ার টেবিলটায় বসে বসে ফোন টিপছে।
কিছুক্ষণ পর হাওয়া রুমে চলে আসে। হাতে চায়ের কাপ-নিয়ে।
-এই রিফাত নে,
-হু
রিফাত টিবিলের পার্শে রাখা চেয়ারটায় বসেছিলো। হাওয়া রিফাতের হাতে চায়ের কাপটা দিয়ে বলে উঠে।
-আজকে ফস্ট টাইম আমার হাতের চা-খাচ্ছিস, বলবি কিন্তু কেমন হয়েছে।
-আচ্ছা,
রিফাত মুচকি হেঁসে হাওয়া হাত থেকে চায়ের কাপটা নিয়ে নেয়। চায়ে চুমুক দিয়ে দেখে বেশ ভালোই চা-বানায় হাওয়া।
-অসাধারণ হয়েছে রে,
-তাই
-হুম
-মিথ্যা বলছিস না তো?
-আরে মিথ্যা বলতে যাবো কেন?
-হিহি, আমার হাতের চা-অনেক ভালো হয় যানি তো। আব্বু আম্মু অনেক প্রশংসা করে আমার হাতের চা-খেয়ে।
-তাই নাকি?
-হ্যাঁ সত্যি বলছি। আব্বু আম্মু বলে'তো আমার হাত চা-নাকি অনেক ভালো হয়। তবে আমি যানিনা কতটা ভালো হয়। তোকে তো অনেকবার আমার বাসায় নিয়ে যেতে চেয়েছিলাম। তবে তুই তো যাসনি আমার বাড়িতে।
-আমার ভালো লাগেনা রে।
-তুই একটা পাগল।
-হ্যাঁ আমি পাগল রে,।
-পাগল ছারা আর কি, আমার বেস্ট ফ্রেন্ড তুই। আমাদের বাসায় গেলে কি হ'তো? তোর কথা অনেকবার আব্বু আম্মুকে বলেছিলাম আমি। আমার একটা আস্ত গাধা ফ্রেন্ড আছে।
-ওই আমি গাধা?
-তুই গাধা নয়তো কি?
-তোকে আমি।
রিফাত চায়ের কাপটা টেবিলে রেখে। হাওয়াকে ধরতে যায়। এদিকে হাওয়া এক দৌড়ে রুম থেকে বের হয়ে যায়। তবে রিফাত হাওয়ার পিছন ছারেনি।
)আসলে রিফাতকে অনেকবার নিজের বাসায় ডেকেছে হাওয়া। তবে কক্ষনো হাওয়ার বাসায় যায়নি রিফাত।
হাওয়া রিফাতকে বাবা-মার সঙ্গে পরিচয় করে দিতে চেয়েছিলো। তবে রিফাত কারো বাসায় যায় না। এটা রিফাতের অভ্যাস।
একদিন রিফাত একটা গাছের নিচে বসে ডাইরিতে কি যেন লিখছে। হাওয়া উঁকি ঝুঁকি মেরে রিফাতকে দেখতে শুরু করে।
রিফাত ডাইরিতে কি যে এতো লিখে? হাওয়া রিফাতকে লুকিয়ে লুকিয়ে দেখতে শুরু করে। এদিকে রিফাত বুঝে যায়। হাওয়া আমার পিছনে। তাই রিফাত ডাইরিতে বড় বড় করে লিখে।
এই যে, এভাবে লুকিয়ে লুকিয়ে অন্যর লিখা দেখতে নেই।
হাওয়া এবার রিফাতের কাছে' বসে বলে উঠে।
-এই রিফাত তুই কেমন করে বুঝলি রে' আর আমি তোর পিছনে।
আসলে হাওয়ার হাটা-চলা অনুভব করতে পারে রিফাত। এটা কোনো সিনামা না। বাস্তবে এমনি হয়ে থাকে। যেমন ধরুন, আপনার প্রিয়জনের কন্ঠ আপনি ধরতে পেরে যান।
দূর থেকে কন্ঠ ভেসে আসলেও আপনি তা অনুভব করতে পারেন। তেমনি হাওয়ার হাটা-চলা অনুভব করতে পারে রিফাত। রিফাত আর হাওয়ার বন্ধুত্বটা অনেকদিনের। তবে রিফাতের আর কোনো বন্ধু ছিলোনা হাওয়া ছারা।
-রিফাত একটা কথা বলি!!
-হুম বল (রিফাত ডাইরিতে কি যেন লিখছে। আর হাওয়ার সঙ্গে কথা বলছে)
-আমি যে এখানে এসেছি তুই কেমন করে বুঝলি?
-হা হা তোর মতো পেত্নী আসলে, যে কেও বুঝতে পেরে যাবে।
-কিহহহ
হাওয়া রিফাতের হাত থেকে ডাইরিটা কেরে নেয়। আর দেখতে থাকে কি লিখেছে রিফাত।
-এই আমার ডাইরিটা দে বলছি।
-না দিবো না, তুই ডাইরিতে কি লিখছিস দেখি আগে।
-ওই না।
রিফাত হাওয়ার হাত থেকে ডাইরিটা নেওয়ার চেষ্টা করে তবে পারেনা।
হাওয়া ডাইরিটাতে দেখে রিফাত গল্প লিখেছে। ছোট্ট গল্প গল্পের নাম। এক টুকরো চোখের জল। গল্পের নামটা দেখেই হাওয়া অনেক হাঁসাহাঁসি শুরু করে। এদিকে রিফাত ডাইরিটা হাওয়ার হাত থেকে কেঁড়ে নেয়।
হাওয়া হিহি করে হেঁসেই যাচ্ছে। তাই রিফাত হাওয়াকে বলে উঠে।
-এই খিকখিক করে হাঁসছিস কেন পেত্নী।
-তোর গল্পের নামটা দেখেই তো অনেক হাঁসি পাচ্ছে। (মিস্টি হেঁসে)
-কেন,
-এক টুকরো চোখের জল, এটা আবার গল্পের নাম হলো নাকি? এক টুকরো আবার চোখের জল হয় নাকি?
-হুম রে হয়।
-তাই নাকি আচ্ছা কিভাবে?
রিফাত হাওয়ায় দিকে তাকিয়ে একটা মুচকি হাঁসি দিয়ে বলে।
-আচ্ছা দেখ, আমি এই গল্পটা না লিখে যদি অন্যকেউ লিখতো। তবে গল্পটা পড়েই তুই কমেন্ট করতিস। তবে না। তুই আমাকে চিনিস তাই ভালো কমেন্ট ভালো কমেন্ট করতে তোর কেমন যানি লাগে? হা হা ঠিক বলেছি তো? আচ্ছা তোর প্রশ্নের উত্তর দেই আগে। শোন তাহলে গল্পের নামটা এক টুকরো চোখের জল। তাই তুই এতো হাঁসহাঁসি করছিস। তবে চিন্তা করে দেখতো। এক টুকরো চোখের জল পরতে পরতে কতগুলো এক টুকরো চোখের জল ঝরে যায় চোখ থেকে।
একবারে তো আর সমস্ত চোখের জল ঝরে যায় না তাই না। জীবনে যতদিন বেঁচে আছি। ততদিন চোখের জল ঝরে যাবে। তাই এক টুকরো চোখের জল। এক খনিকের জন্য বুঝলি?
-ওহ আচ্ছা ভালোই তো উত্তর দিতে পারিস।
-হা হা হাঁসালি তুই, একটা জিনিস নিয়ে হাঁসাহাঁসি করার আগে। ভালো করে আগে বুঝে নিবি ওকে। (কথা গুলো বলে রিফাত রাগ করে ডাইরিটা হাতে নিয়ে। ওখান থেকে উঠে যায়।
(যাক'না রিফাত দুজনের ঝগড়া তো চলতেই থাকবে,এবার তাহলে বাস্তবে ফিরে আসি,)
হাওয়া দৌড়ে রুম থেকে বের হয়ে চলে যায়। এদিকে রিফাত হাওয়ার পিছন। আম্মু আবার রিফাতের রুমে দিকে আসছিলো। হাওয়া দৌড়ে গিয়ে আম্মুর পিছনে লুকায়।
-মা- দেখেন আপনার ছেলে কেমন করে আমার পিছু নিয়েছে।
-আম্মু তুমি এই পাজিটাকে ধরে দেও তো। দেখাচ্ছি ওকে। আমি নাকি গাঁধা।
(চলবে?)
এক টুকরো চোখের জল! পর্ব-০৬ এক টুকরো চোখের জল! পর্ব-০৬ Reviewed by গল্প প্রেমিক on 12:56 PM Rating: 5

No comments

হৃদয়স্পর্শী গল্প

হৃদয়স্পর্শী গল্প