এক টুকরো চোখের জল! পর্ব-০৭

গল্পঃ #এক_টুকরো_চোখের_জল
 (পর্ব ৭)
-আম্মু তুমি ওকে ধরে দেও প্লিজ।
-এই তোরা কি শুরু করছিস? বউমা তুমি রিফাতের কাছে যাও। আর রিফাত এরকম করছিস কেন? (কথা গুলো বলে আম্মু নিজের রুমের দিকে চলে যায়। এদিকে হাওয়া রিফাতের সামনে। মাথাটা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে। রিফাত মুচকি হেঁসে বলে উঠে।
-এই এইবার কোথায় যাবি বল? আমাক গাধা বলা হচ্ছে তাই না।
-সরি,
-আরে সরি বলতে হবে না। আমি তো গাধায় তাই তো দয়া করে আমার বন্ধু হয়েছিলিস হা হা।
হাওয়া এবার রিফাতের চোখের দিকে তাকিয়ে বলে।
-হ্যাঁ তুই তো গাধায়। তবে দয়া করে তোর বেস্ট ফেন্ড হয়নি আমি ওকে। তুই সব ছেলেদের থেকে আলাদা ছিলিস। কোনো মেয়ের দিকে তাকিয়ে থাকতিস না তাই। তোকে আমি অনেক ভালোবাসি বন্ধু হিসেবে। প্রেমিক না।
-ওহ আচ্ছা।
-হ্যাঁ, রিফাত একটা কথা বলি।
-হ্যাঁ বল।
-আমি যদি চলে যাই তোকে রেখে ভালো থাকতে পারবি তো।
-হুম, পারবো তো, কিছুদিন কষ্ট হবে হয়তো। তারপর সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে।
-তাই
-হু,
-আজকে বিকেলে আমাকে একটা যায়গায় নিয়ে যাবি প্লিজ। আমার আনিছ আসবে ওখানে।
রিফাত এবার হাওয়ার দিকে তাকিয়ে আছে।
রিফাতের চোখ গুলো ঝলমল করছে। রিফাত চোখের পার্শে থাকা একটুখানি চোখের জল মুছিয়ে, মিষ্টি হেঁসে বলে উঠে।
-হুম অবশ্যই নিয়ে যাবো। আর তোর প্রেমিকের সঙ্গে আমার পরিচয় করিয়ে দিবি তো?
-হুম দিবো।
-আচ্ছা কখন যাবি?
-আজকে বিকেলে।
-আচ্ছা এখনো তো অনেক সময় আম্মু মনে হয়। খারাপ তৈরি করছে পরাটা আর আলুর তরকারি। তুই গিয়ে আম্মুকে হেল্প কর।
-আচ্ছা, ঠিক আছে।
হাওয়া রান্নাঘরের দিকে চলে যায়। এদিকে রিফাত রুমে চলে আসে। এসে পড়ার টেবিলে বসে। ফোনটা বের করে গেম খেলতে থাকে।
{রিফাত আর হাওয়ার বন্ধুত্বটা ছিলো অনেক অটুর। খুনসুটির কোনো অভাব ছিলোনা।
-এই রিফাত কোথায় যাচ্ছিস শোন আমি তোর সঙ্গে মজা করছিলাম তো। তোর গল্পটা পড়তে দিবিনা বল। আচ্ছা দেখ এই যে কান ধরেছি। প্লিজ চলে যাসনা। এই রিফাত দাঁড়া বলছি।
রিফাত হাওয়ার কোনো কথানা শুনে হাঁটতে শুরু করে। এদিকে হাওয়া রিফাতের পিছন পিছন আসতে থাকে। রিফাত একটা বড় গাছের নিচে গিয়ে বসে পরে। হাওয়া রিফাতের কাছে গিয়ে বলে উঠে।
-সরি রিফাত এমন করিসনা প্লিজ তখন তো তোর সঙ্গে মজা করছিলাম। আচ্ছা আমাদের বাসায় যাবি আজ বল, তোকে অনেককিছু রান্না করে খাওয়াবো।
-না যেতে পারবো না।
-কেন যেতে পারবিনা। (হাওয়া রিফাতের পার্শে বসে পরে। তবে রিফাত আর হাওয়ার বন্ধুত্বটা ছিলো পবিত্র। বন্ধুত্বের ভিতর কোনো নোংরামি ছিলোনা। হাওয়া রিফাতের পার্শে বসলে একহাত দূরে বসে। এবার হাওয়া রিফাতের শরীল ঘেঁষে বসে।
-এই কি করছিসটা কি? (রিফাত)
-কেন কি হয়েছে।
-শরীল ঘেঁষে বসলি কেন?
-মন চেয়েছে তাই।
-মন চেয়েছে তাই শরীল ঘেঁষে বসতে হবে।
-হুম আমার ইচ্ছে।
-আমার থেকে একটু সরে'বস নয়তো তোর সঙ্গে সব বন্ধুত্ব এখানেই শেষ।
রিফাতের কথা'মতো হাওয়া আগের
মতো একহাত দূরত্ব নিয়ে সরে'বসে।
রিফাত এবার মুচকি হেঁসে বলে।
-পাজি একটা।
-ওই কাকে পাজি বলছিস।
-কেন তোকে, আর কাকে বলতে যাবো।
-আমি মোটেও পাজি না। প্লিজ রিফাত আমার বাসায় যাবি। তোকে অনেককিছু রান্না করে খাওয়াবো।
-সরি রে, পারবোনা।
-কেন? গেলে সমস্যা কি?
-আমার নিজের মামা,খালাদের বাসায় যাইনা আমি। আর তোর বাসায় যাবো হা'হা।
এবার হাওয়া চোখ গুলো বড়'বড় করে রিফাতের দিকে তাকিয়ে বলে উঠে।
-তার মানে তুই আমাকে পর ভাবিস। সরি'রে আর কখনো বলবো না। বাসায় নিয়ে যাওয়ার জন্য। আমি তো তোর কেউনা।
-এই পাজি শোন আমি কিন্তু এটা বলতে চাইনি। তুই আমার একমাত্র বন্ধু।
-না তুই খুব খারাপ আমাক তুই পর ভাবিস।
-আরে না। তুই আমার অনেক আপন। (শুধু বউ বানাতে অপেক্ষা মনে মনে বলে উঠে রিফাত)
-হু এখন বলবি তো অনেক আপন। তবে আমার বাসায় যাচ্ছিসনা কেন?
-সরি রে যেতে পারবোনা।
-হুম যানতাম তুই মুখে বলিস আমি তোর আপন। তাই তো আমার বাসায় যেতে তোর খারাপ লাগে।
-হাওয়া আমি তা বলতে চাইনি। আমি সত্যি কারো বাসায় যাইনা।
-আচ্ছা থাক যেতে হবেনা।
-ধন্যবাদ রে,
-গাধা একটা,
হাওয়া মুখটা ঘুরিয়ে নেয়। রিফাত আর হওয়ার বন্ধুত্বের মধ্যে খুনসুটির কোনো অভাব ছিলোনা। রিফাত হাওয়াকে ভালোবাসতো তবে হওয়ার অন্যকাউকে ভালোবাসতো রিফাত বলতে চেয়েছিলো। তবে কখনো বলতো পারিনি। হাওয়া আমি তোকে ভালোবাসি।
এবার তাহলে বাস্তবে আসা যাক। রিফাত টেবিলে বসে আছে। আর ফোনে গেম খেলছে। এদিকে হাওয়া সকালের খারাপ রান্না করে রুমে নিয়ে আসে।
-এই রিফাত, খাবার নিয়ে এসেছি খেয়ে নে।
-তুই খেয়ে'নে আগে তারপর আমি খেয়ে নিবো।
-না দরকার নেই। আয় দুজনে খেয়ে নেই।
-না রে পারবো'না।
-কেন আমার সাথে খেলে তোর লজ্জা করেনাকি। কালকে তো আমার পার্শে বসে খেলি। আর আমার পার্শে বসে ডাইরিতে কি যেন লিখতিস। তখন কি তোর লজ্জা করতো তো।
,-ওই পাজি বেশি কথা বলছিস কেন? আমি খাবোনা বলছি মানে আমার ভালো লাগছেনা। এতে পুরো কাহিনি শুনানোর কি আছে।
-ওই আমি তোকে কাহিনি শুনাচ্ছি?
-তা নয়তো কি?
-আচ্ছা দাঁড়া তোকে দেখাচ্ছি আমি।
হাওয়া রিফাতকে টেবিলথেকে টেনে নিয়ে আসে। মেঝেতে বসে দেয়। আর পরাটায় আলুর তরকারি মাখিয়ে রিফাতকে খাইয়ে দেয়। রিফাত হাওয়ার চোখের দিকে তাকিয়ে আছে।
রিফাতকে খাইয়ে দিয়ে হাওয়া রিফাতকে বলে উঠে।
-রিফাত তুই কোনো কাজ করিসনা কেন রে? বাবার উপর দিয়ে আর কতদিন চলবি।
-হু,
-একটা কাজ খুজে নে।
-হুম চেষ্টা করবো।
(চলবে?)
এক টুকরো চোখের জল! পর্ব-০৭ এক টুকরো চোখের জল! পর্ব-০৭ Reviewed by গল্প প্রেমিক on 1:06 PM Rating: 5

No comments

হৃদয়স্পর্শী গল্প

হৃদয়স্পর্শী গল্প