অহংকারী মেয়ে! পর্ব-০৬


#পর্ব_০৬
. -আমি শান্তকে বিয়ে করবো।
-কিহহহহ(এনির বাবা অবাক হয়ে)
-হ্যা বাবা।
-কিন্তু তুইতো ওরে একদম সহ্য করতে পারিস না, সারাক্ষণ ঝগড়ায় লেগে থাকিস, হঠাৎ এমন পরিবর্তন হলি কিভাবে?
-বাবা আমি এসব কিছু জানিনা, তারাতারি বিয়ের ব্যবস্থা করো।
-সামনে তোদের পরীক্ষা
-পরীক্ষা আরো ৫ মাস আছে।
-তোর কি হয়েছে বল তো?
- কিছু না, শান্ত তো তোমাদের পছন্দের ছেলেই, শান্তর সাথে বিয়ে দিতে কোনো আপত্তি আছে নাকি?
-নাহ,
-তাহলে তারাতারি শান্তকে বলে বিয়ের ব্যবস্থা করো বলে এনি রুমে চলে যায়।
.
-বাবা একটা কথা ছিল (এনির বাবা)
-জ্বি আংকেল বলেন,
-কথা টা কিন্তু পার্সোনাল।
-আগে বলুন।
-আমাদের এনি তোমাকে বিয়ে করতে চায়।
-কিহহহ?
-হ্যা,
-আংকেল আমি পারবো না।
-কেন বাবা?
-কিছু সমস্যা আছে,আর আমি এখন বিয়ের জন্য প্রস্তুত নই।
-কি হয়েছে? আর কি সমস্যা?
-আংকেল আমি একটু রুমে যায় প্লিজ,বলে শান্ত রুমে আসার সাথে সাথে জুইকে ফোন দিয়ে সব কিছু বলে।
-এই শান্ত এসব কি বলছো? (জুই)
-হ্যা।
-না না না এটা হতে পারে না,আমি তোমাকে সত্যিকারে ভালোবাসি।
-আমিও রে জুই, আমি তোমাকে ছাড়া থাকতে পারবো না বলে কান্না করে দেয়।
-জুইও কান্নায় ভেঙ্গে পরে।
-এই কান্না করছো কার সাথে(এনি)
-তুমি?
-ওহহহ ডিস্টার্ব করলাম নাকি?
-মানে?
-জুই এর সাথে আর কথা বলবানা।
-আমি জুইকে ভালোবাসি 💚
-ঐ চুপ,এই মুখে জুইয়ের নাম নিবি তাহলে খুব খারাপ হবে বলে দিলাম।
-এনি আমি এটা বিশ্বাস করি যে তোমাদের ফ্যামিলির জন্য আমি পড়ালেখা করতে পারছি,এতে আমি সারাজীবন কৃতজ্ঞ থাকবো।

প্লিজ এনি আমার সাথে এসব টা করো না, আমি জুইকে বড্ড বেশি ভালোবাসি , আমি জুইকে ছাড়া বাঁচতে পারবো না।
-নাটক বন্ধ কর।
.
শান্ত তখন এনির পায়ে ধরে ফেলে,
-এই কি করছিস?
-প্লিজ আমাকে জুইয়ের কাছ থেকে আলাদা করো না। জুই আমার সব।
-এখন কি তোর সিনেমা বন্ধ করবি নাকি অন্যকিছু করবো?
-অন্য যা কিছু করো কিন্তু জুইয়ের কাছ থেকে আমাকে সরিয়ে নিও না।
-চুপ ছোট লোকের বাচ্চা বলে এনি চলে যায়। শান্ত তখন কান্না করতে থাকে।
-এনি(এনির বাবা)
-হ্যা বাবা বলো(এনি)
-বিয়েতে মনে হয় শান্ত রাজি না।
-কেন?
-জানিনা।
-বাবা আমি এসব কিছু জানিনা, আগামী দুই দিনের মধ্যে ওর সাথে বিয়ে হতে হবে।
-ও তো রাজি না,তাহলে কি করবো?
-দরকার হলে জোর করো।
-সবকিছু জোর করে হয় না।
-আপোষে কেউ না দিলে জোর করে আদায় করে নিতে হয় আর যদি না পারো তাহলে তুমি তোমার একমাত্র মেয়েকে হারাবা।
-এসব বাজে বকছিস কেন?
-বাজে বকছি না, সত্যি সত্যি খারাপ কিছু করে ফেলবো।
-তুই রুমে যা আমি দেখতেছি।
বলে এনির বাবা শান্তর রুমে প্রবেশ করে।
-বাবা আমি একটা কথা বলি?
-জ্বি আংকেল বলেন।
-আমাকে কি তোমার বাবার মতো মনে হয় না?
-হ্যা।
-যদি বাবা ভাবো তাহলে এই অনুরোধটা রাখো প্লিজ।
-আরে আংকেল এসব কি করছেন, আপনি রুমে যান, যা ভালো হয় তাই করেন।
-এনির বাবা তখন খুশি মনে রুম ত্যাগ করে।
শান্ত তখন জুইকে ফোন করে বলে তার সাথে দেখা করতে।
দু'জনে দেখা করার পরে দু'জন দু'জনের চোখে চোখ রেখে কান্না করে দেয়।
জুই তখন শান্তকে জড়িয়ে ধরে হাউমাউ করে কান্না করে দেয়।
শান্তও নিশ্চুপ থেকে কান্না করে দেয়।
-শান্ত আমি তোমাকে ছাড়া থাকতে পারবো না (জুই)
-জুই আমিও, তোমাকে ছাড়া থাকা কোনো ভাবেই সম্ভব না।
-এটা কি ফিরানো যায় না?(জুই)
-যে আমাকে ১২ বছর হয় লালন-পালন করতেছে তার বিপরীতে একটা কথা বলবো কি জ্ঞান নিয়ে?
-তাহলে কি আমাদের মিলন হবে না?
-আমি তোমাকে বিয়ে করবোই।
-শান্ত আমি তোমাকে ছাড়া একটা মুহূর্তও ভাবতে পারিনা।
- আর ভাবতে হবে না (পিছন থেকে এনি)
-জুই তখন দৌঁড়ে উঠে এনিকে জড়িয়ে ধরে বলে, এনি বইন আমার আমাদের সাথে এসব করিস না।
-আমাদের বিয়েতে আসিস।
-এনি সেই ক্লাস ওয়ান থেকে আমি তোর বেস্টফ্রেন্ড, তুই আমার সাথে এসব করতে পারবি?
-স্বামীর ভাগ আপন বোনকেও কেউ দেয় না আর সেই জায়গায় তো তুই বান্ধবী।
-প্লিজ এনি, আমি শান্তকে ছাড়া বাঁচতে পারবো না।
এনি তখন শান্তর হাত ধরে টেনে গাড়িতে উঠিয়ে নেয়।
-এনি প্লিজ আমাদের সাথে এই কাজটা করো না (শান্ত)
-এখন কি আপনা-আপনি চুপ করবি নাকি খারাপ কিছু করতে হবে?
-শান্ত তখন চুপচাপ চোখের পানি ছেড়ে দেয়।
দুইদিন পরে এনি আর শান্ত এর বিয়ে হয়ে যায়।
আজকে দু'জনের বাসর রাত,শান্ত ছাদের উপরে গিয়ে জুইকে একটা মেসেজ দেয়।
জুই আমি তোমাকে ভালোবাসি, আমার সবকিছু তোমার, আমাকে এনি কখনোই মন থেকে পাবে না, আমাকে বিশ্বাস করো আগামী ৬ মাসের মধ্যে আমি তোমাকে বিয়ে করবো , প্লিজ বিলিভ মি।
এটা লিখে মেসেজ সেন্ড করে দেয়।
-এখানে কি করছো?(এনি)
-এমনি তে বসে আছি(শান্ত)
-রুমে আসো।
-কেন?
-আসো বলছি,
-শান্ত তখন এনির পিছনে পিছনে রুমে যায়।
শান্ত রুমে প্রবেশ করার পরে এনি দরজা লাগিয়ে শান্তর দিকে এগুচ্ছে আর শাড়ির কুচি গুলো এক এক করে খুলছে,
এনি যখন শান্তর খুব কাছে চলে আসে শান্ত তখন এনিকে জোরে ধাক্কা দিয়ে ফ্লোরে ফেলে দেয়।
.
এনিকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়ার পরে এনি অবাক হয়ে শান্তর দিকে তাকিয়ে....
-কি হয়েছে(এনি)
-তুমি আমার কাছে আসো কেন?
-এখন তুমি আমার স্বামী হও, আমার যা মন চায় তা করবো।
-আমি কিছু করতে পারবো না।
-কেন?
-আমার এই শরীর শুধু জুই এর জন্য।
-এখন কিন্তু খুব খারাপ হবে।
-কি খারাপ করবা তুমি? মারবা? মারো।
-এত কথা না বলে আসো ঘুম আসছে বলে শান্তর হাত ধরে।
-শান্ত হাত ঝাড়া দিয়ে, এই হাত ধরার শুধু জুই এর অধিকার আছে তোমার না।
-জোর করে আদায় করতে হবে?
-কি জোর করবা?
-বলছি ভালোই ভালোই চলো একসাথে শুয়ে ঘুমায়।
-শান্ত তখন পাতলা একটা কাথা নিয়ে সোফার উপরে গিয়ে শুয়ে পরে।
এনি শান্তর দিকে অবাক চোখে তাকিয়ে আছে।
শান্ত সোফায় শুয়ে নাকে মুখে কাথা দিয়ে জুই এর কথা ভাবতে'ই চোখ দিয়ে পানি চলে আসে।
আর এনি খাটের উপর বসে বসে শান্তর দিকে তাকিয়ে আছে।
সকাল হওয়ার পরে সবাই একসাথে নাস্তা করার পরে শান্ত বাহিরে যাবে এমন সময়...
-কোথায় যাও?(এনি)
-মন যেখানে চায় সেখানে যাবো।
-এভাবে কথা বলো কেন?
-আমি এভাবেই কথা বলি।
-বললেই তো পারো জুই এর সাথে দেখা করতে যাচ্ছো।
-ভালোই আন্দাজ করতে পারো।
-জুই এর সাথে যাতে কখনোই না দেখি।
-জুইকে বিয়ে করবো।
-ঐ চুপ করবি নাকি এখন লাঠি পেটা করবো?
-বড় গলা করে লাভ নাই, বায়
বলে শান্ত বাহিরে চলে যায়।
জুই এর সাথে দেখা হওয়ার পরে জুই অন্যদিকে চেয়ে আছে আর কতক্ষণ পর পর নাক টানছে তাতে শান্ত বুঝতে পারে ও কান্না করছে।
-জুই আমি এখন কি করবো বলো? আমি কিচ্ছু বুঝতাছি না।
-ওর সাথে বাসর করছো, এখন হানিমুনে যাবা।
-জুই এসব কি বলছো?
-মিথ্যা বলছি নাকি?
-আরে বাবা আমাকে তুমি না বুঝলে কে বুঝবে? বলছি তো আমি পরিস্থিতির স্বীকার।
-শান্ত আমি পারতেছি না বলে একটু আওয়াজ করে কান্না করে দেয়।
-শান্তও জুইকে বুকে নিয়ে কান্না করে দেয়।
-শান্ত আমি কি তোমাকে হারিয়ে ফেলবো?
-শান্ত তখন দু'হাতে মাথার দু'পাশে রেখে চোখে চোখ রেখে,আমাকে বিশ্বাস করো?
-হ্যা,
-তাহলে আবারো শুনো, এই শান্তর সবকিছু জুই এর জন্য।
-জুই তখন শান্তকে জড়িয়ে ধরে ফেলে।
তখন শান্তর ফোনে কল আসে।
শান্ত পকেট থেকে মোবাইল বের করে দেখে এনি ফোন করেছে, ফোনটা ধরার পরে...
-কোথায় তুমি?(এনি)
-বউয়ের কাছে(শান্ত)
-কিহহ?
-হ্যা,
-মজা করতেছো?
-ভিডিও কল দাও, তোমাকে দেখতে খুব ইচ্ছা করতেছে বলে ফোন টা কেটে দেয়।
-এই তোমার মাথায় কি ভূত চাপছে?
-না তো।
-তাহলে যে বললা ভিডিও কল করতে।
-হুমম
-কিন্তু কেন?
-ওয়েট বলে শান্ত এনিকে ভিডিও কল করে।
এনি হাসি মনে রিসিভ করে, এনি শান্তকে দেখতে পেয়ে খুশি হয়ে যায়।এমন সময় শান্ত জুইকে কাছে টেনে কিস করে আর এনিকে দেখাচ্ছে।
-শান্ত এসব কি করছো? খুব খারাপ হবে কিন্তু?
-হি হি হি বেশি খারাপ হবে?
-হ্যা,
-তাহলে আরো দেখো বলে জুইকে আরো কাছে টেনে লিপ কিস করে।
কিস করতে দেখে ভিডিও কল কেটে দেয় এনি। শান্ত তখন বুঝতে পারে হয়তো সহ্য করতে পারছে না তাই ফোন কেটে দিছে।
-এসব করার কি দরকার ছিলো?(জুই)
-মন চাইছে তাই করছি এখন এসব বাদ দাও বলে জুই এর সাথে আরো কতক্ষণ সময় কাটিয়ে বাসার দিকে রওনা দেয়।
বাসায় যাওয়ার পরে শান্ত রুমে গিয়ে শুয়ে আছে এমন সময়.....
-এসব কি?(এনি)
-কোন সব?
-জুই এর সাথে এসব কি করছো?
-বউয়ের সাতে স্বামী এসব করে'ই
-আমি তোমার বউ, আমার সাথে করো।
-হি হি হি
-হাসো কেন?
-নতুন বছরের সেরা জোকস টা শোনলাম তাই হাসি আসতেই পারে।
-এটা কি জোকস?
-কেন নয়? তুমি কোনো মেয়ে না, তুমি কিছু মানুষের জীবনে বড় একটা বাধা।
-রাগ উঠাবানা বলে দিলাম।
-রাগ উঠিয়ে দিলে কি করবা?
-থাপ্পর দিবো
-থাপ্পর দিবা?
-হ্যা,
শান্ত তখন ঠাস ঠাস করে......
.
প্রিয় পাঠকবৃন্দগন আপনাদের কি মনে হয় শান্ত কি কাজটি ভালো করছে? জুই এর এখন কি করা উচিত?
অহংকারী মেয়ে! পর্ব-০৬ অহংকারী মেয়ে! পর্ব-০৬ Reviewed by গল্প প্রেমিক on 4:03 PM Rating: 5

No comments

হৃদয়স্পর্শী গল্প

হৃদয়স্পর্শী গল্প