সুন্দর ভালোবাসা! পর্ব-০৬ (শষ পর্ব)

গল্পঃ (সুন্দর ভালোবাসা)
(শেষ পার্ঠ-৬)
--
রিকশায় করে যাওয়ার মজাই আলাদা।
আমি রাইসা আর মেহেদী এক রিকশায়। আর নীলাদ্রি নিলা। এক রিকশায়।
। নদী দেখতে গেলাম।
আমি মেহেদীকে কোলে করে নিয়ে আছি।
আর রাইসা আমার কাঁধে মাথা রেখে আছে।
আর নীলাদ্রি আর নীলা মুচকি মুচকি হাঁসছে।
নীলাঃ দুলাভাই ভালোভাবে ধরে রাখেন। যেন পরে না যায়।
নীলাদ্রিঃ হি হি হি দুলাভাই শক্ত করে ধরেন।
ওদের কথা শুনে। রাইসা লজ্জায় আমার বুকে মাথা লুকালো। আর মেহেদী কিছু বুঝছে না। শুধু হাঁসছে।
আমি মেহেদীকে বললাম মেহেদী চকলেট খাবে।
মেহেদী হাঁ ইসারা দিলো।
-আমরা প্রথমে আমাদের গন্তব্যে পৌচ্ছে যাই। তারপর কিনে দিবো।
রিকশায় করে আমরা যাচ্ছি। রাইসা আমার কাঁধে মাথা রেখে আছে। মেহেদী আমার কোলে। মেহেদীর বয়স ৪বছরের মতো।
তাই মেহেদীকে কোলে রাখতে সমস্যা হচ্ছে না। আর এদিকে নীলাদ্রি আর নীলা। আরেক রিকশায় করে যাচ্ছে। আর আমাদের দিকে তাকিয়ে মুচকি মুচকি হাঁসছে।
আমরা আমাদের গন্তব্যে পৌচ্ছে গেলাম।
নীলাদ্রি আর নীলা বলে উঠলো। দুলাভাই চলেন। নৌকায় উঠি। মেহেদী তুমি আমার কাছে এসো। মেহেদী দৈরে নীলাদ্রির কাছে চলে গেলো।
-ওকে চলো
রাইসা বলে উঠলো।
-তোমরা যাও আমি যাবো না।
-কেন? (আমি)
-আমার ভয় করে তো।
সঙ্গে সঙ্গে নীলাদ্রি আর নীলা বলে উঠলো। রাইসা আমার জানু ভয় পাস কেন? তোর সঙ্গে দুলাভাই তো আছে। দুলাভাইকে নাহয়। জরীয়ে ধরে থাকবি। বলে হি হি হি হি করে হেঁসে দিলো।
নীলাদ্রি নীলা আর মেহেদী একটা নৌকায় চড়ে বসলো।
-দুলাভাই তারাতাড়ি উঠেন তো।
-আচ্ছা (আমি)
-আমি উঠবো না। (রাইসা)
-আরে উঠোয় না। এতো ভয় পেলে চলে নাকি। আমি তো আছি তাই না?
-হুম
রাইসা ভয়ে ভয়ে নৌকায় চরে বসলো।
রাইসা আমি মাঝখানে বসে আছি। আর নীলাদ্রি নীলা আর মেহেদী আমাদের সামনে।আমি মাঝি চাচাকে বললাম। চলেন চাচা।
নৌকা ছেরে দেওয়া সঙ্গে সঙ্গে রাইসা আমাকে জরিয়ে ধরেছে। ভয়ে।
-রাইসা ভালো করে জরীয়ে ধর দুলাভাইকে হিহিহিহি (নীলা)
-কি যে বলিস না। (রাইসা)
-কি আবার বললাম (নীলা)
আচ্ছা তোমরা ঝগড়া করছো কেন। রাইসা তো আমার বউ তাই না? আমি জরীয়ে নিলে সমস্যা কি।
-তাই তো বলছি দুলাভাই।
-তুমিও (রাইসা আমার উদ্দেশ্য করে বললো)
-তো কি হয়েছে আমাকে জরিয়ে ধরো সমস্যা কি।?
-আমি কিন্তু চলে যাবো।
-কোথায় যাবা তুমি?
রাইসা রেগে দাঁড়িয়ে গেলো। আবার ভয়ে আমার কাছে। লক্ষি মেয়ের মতো বসে গেলো।
-রাইসা কি বেপার রে। বসে পরলি কেন। (নীলাদ্রি)
-হুম এখানে কোথায় যাবো আমি। চারদিকে তো পানি আর পানি। (রাইসা)
রাইসা আমার হাত শক্ত করে ধরে আছে।
মাঝি নৌকা টানছে। আর বাতাসে রাইসার চুল গুলো। উরছে। আমি রাইসার চুল গুলো ঠিক করে দিচ্ছি।
নীলাদ্রি আর নীলা আমাকে বলে উঠলো। দুলাভাই শুধু রাইসার চুল ঠিক করে দিলে হবে। আমাদের চুল ঠিক করবে কে?
-তোমাদের বিয়ে দিয়ে দিই। তারপর তোমাদের জামাই তোমাদের চুল গুলো ঠিক করে দিবে। ঠিক আছে।
-বিয়ে তো করায় যায়। কিন্তু আপনার মতো রোমান্টিক মানুষ কি পাওয়া যাবে?
-আরে পাবে পাবে।
-তাহলে একটু খুজে দেন।
-আচ্ছা
আমি নদীর পানিতে হাত দিচ্ছি। আর রাইসাকে বলছি পানি ছুয়ে দেখো। রাইসা ভয় পাচ্ছে। আমি রাইসাকে জরিয়ে ধরে ওর হাত পানিতে আলতো করে ছুয়ে দিচ্ছি। এভাবেই আমাদের কেটে গলো অনেকটা সময়। আমরা নৌকা থেকে নেমে।
রেস্টুরেন্টে চলে আসলাম। গেস্ট রুমে আমরা ঢুকেছি।
নীলাদ্রি আর নীলাকে বললাম তোমরা কি খাবে। ওরা দুজনি তাদের পচ্ছন্দের খাবার অর্ডার দিলো। মেহেদীকে বললাম। তুমি কি খাবে। বলছে কিছু না।
পিচ্চি তাই এমন করছে। মেহেদীর জন্য আমি খাবার অডার করলাম। রাইসা আর আমি দুজনে এক খাবার অডার করলাম।
আমি রাইসাকে খাইয়ে দিচ্ছি। আর রাইসা আমাকে খাইয়ে দিচ্ছে।
খাইয়ে দেওয়ার কারন হলো। নীলাদ্রি আর নীলা। ওরা জোর করলো। রাইসাকে খাইয়ে দিতে।
এবার নীলাদ্রি আর নীলা দুজন দুজনকে খাইয়ে দিচ্ছি। আমি হেঁসে হেঁসে বললাম। আরে তোমরা আবার কি করছো?।-
-দুলাভাই আপনি তো আমাদের বান্ধবীকে খাইয়ে দিচ্ছেন আমাদের কে খাইয়ে দিবে?
তাই আমরা দুজন দুজনকে খাইয়ে দিয়ে।
ইচ্ছে মিঠাচ্ছি।
আমি আর হঁাসি চেপে রাখতে পেলাম না। হেঁসে দিলাম। মেহেদীকে দেখছি টুকটুক করে খাচ্ছে। নীলাদ্রি আর নীলাকে বলে উঠলাম।
-তোমাদের জামাই পায়ে গেছি😀
-কোথায় দুলাভাই।
-ওই যে দেখো। মেহেদী।
নীলাদ্রি আর নীলা হেঁসে উঠলো। বললো তাই তো। আমার পিচ্চি জামাই তো এখানে।
আর মেহেদীর দিকে তাকিয়ে দেখলাম। হেঁসে যাচ্ছে। সমনের ফোকলা দাঁত বের করে।😁 আমার খাইয়ে দেওয়া শেষ।
আমি বিল দিয়ে দিয়ে। আমরা রেস্টুরেন্ট থেকে বের হয়ে গেলাম।
এখন আমরা নদীর ধারে বসে গল্প করছি।
-রাইসা বলে উঠলো আরে চলো। আর ভালো লাগছে না। বাসাই চলো।
রাইসার কথা মতো আমরা। বাসায় চলে আসলাম। মানে আমার শশুর বাড়ি আসলাম। আর রাইসার বান্ধবীরা দুজনে তাদের বাসায় চলে গেলো।
আমরা বাসায় আসার সঙ্গে সঙ্গে। আবার জামাই আদর করা শুরু করলো। আমি বললাম আরে আরে আম্মাজান আমরা এখনি তো খেয়ে আসলাম। কেউ শুনছেই না। আমার কথা। রাইসা বলছে তো কি হয়েছে।
আমি রাইসার দিকে তাকিয়ে বললাম। এসো তুমিও এসে দুজনে বসে খাবো। রাইসা বললো না না। আমি বললাম আরে এসোই না।
তখন আমার শাশুড়ী আম্মা হেঁসেই যাচ্ছে।
শাশুড়ী আম্মা একটু বাইরে গেলো।
আমি রাইসাকে অনুরোধ করলাম। তুমি তো যানো আমরা এখনি খাইয়ে আসলাম। এখন কিছু খেতে পারবো না। তুমি কিছু একটা করো প্লিজ।
রাইসা বললো। ওকে মহারাজ। আমি রুমে চলে আসলাম।
এদিকে শাশুড়ী আম্মা রাইসাকে বলছে। জামাই কোথায় গেলো রে? রাইসা/রুমে গেছে। আম্মু খাবারটা দেও আমি নিয়ে যাচ্ছি।
এরপর রাইসা রুমে চলে আসলো।
রাইসা খাবারটা টেবিলে রেখে আমার কাছে আসলো।
তখন দুপুর।
আমি রাইসাকে বললাম জানু আমার খুব ঘুম পাচ্ছে।
রাইসা আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে।
আর আমি আরামে ঘুমাচ্ছি।
কিছু একটা অনুভব করলাম। রাইসা আমার কপালে ছোট্ট করে চুমু একিঁয়ে দিলো।
বিকেলে আমাকে ঘুম থেকে উঠালো। রাইসা বললো শশুড় বাড়ী এসে এতো ঘুম পারলে হবে মহারাজ?
বিকেলে আমি আর রাইসা। দুজনে ঘুরতে বের হলাম। আমি নীল পাঞ্জাবি পরেছি। আর রাইসা নীল শাড়ী।
আমি রাইসার এলাকা চিনি তাই কোনো রকমে চিনা লাগবে না আমার।
আমি একটা রিকশা দাঁড় করালাম। এবার আমরা দুজনে গেলাম। পার্কে।
রাইসা ফুসকা খাচ্ছে আর আমি রাইসার দিকে তাকিয়ে আছি।
রাইসা আমাকে বলে উঠলো কি দেখছো এভাবে। লজ্জায় বললো। আমি বললাম আমার মিষ্টি বউটাকে দেখছি। রাইসার গাল লাল হয়ে গেছে লজ্জায়।
রাইসা বললো। কি যে বলো না।
-কি বললাম আবার। আমার মিষ্টি বউটা যে অনেক মিষ্টি।
-আমি মিষ্টি না।
-তাহলে নিমকি।
-তাও না
-ওকে বাবা তুমি তাহলে পেত্নী
-কি বললা।
--
-আরে আরে রাগ করো কেন? রাগ কিন্তু তোমাকে মানাই না বুঝছো।
-আমি পেত্নীর মতো দেখতে?
-হুম
-যাও তোমার সঙ্গে কথা বলবো না।
-আরে আরে মিথ্যা বললাম তো। আমার বউটা অনেক কিউট।
এবার ফুসকা গুলো খেয়ে নিয়ে। চলো ওদিকে যাই।
-ওকে.....
রাইসা আর আমি মাঠির রাস্তা দিয়ে হেঁটে হেঁটে চলেছি।
দমকা বাতাস বইছে। রাইসার চুল গুলো উরে উরে যাচ্ছে।
আমি রাইসার দিকে তাকিয়ে হাঁটছি।
আমরা বাসায় চলে আসলাম।
.
।কালকে/
আজকে আমি রাইসাকে বাসায় নিয়ে যাচ্ছি।
আমি অফিসে জয়েন করেছি। তাই রাইসাকে সময় দিতে পারি না। রাইসা সারাটাদিন আমার জন্য অপেক্ষা করে।
আমি অফিসে থাকলে দুপরে তিন থেকে চারবার কল করে। মেসেজ তো আছেই।
বাসাই ফিরার পর রাইসা আমাকে খুব যত্ন করে খাইয়ে দেয়।
চলুক না এদের এই ভালোবাসা। সারাজীবন। এভাবেই।
সমাপ্ত
সুন্দর ভালোবাসা! পর্ব-০৬ (শষ পর্ব) সুন্দর ভালোবাসা! পর্ব-০৬ (শষ পর্ব) Reviewed by গল্প প্রেমিক on 12:43 PM Rating: 5

No comments

হৃদয়স্পর্শী গল্প

হৃদয়স্পর্শী গল্প