ভুল ভালোবাসা! পর্ব-০২

আবির যখন অধরাকে ফোন দেয়,সেই একই কথা।
আমি তোমার বুকের তিলটা দেখবো।
অধরা অন্য কোন কথা বলে টপিক টা কাটিয়ে নেয়।
দেখা হলেও কোন না কোন ভাবে আবিরের কথা টা কাটিয়ে চলে আসে।
কিন্তু একদিন...
আবির চাল খাটালো,যে করেই হোক অধরাকে বসে আনতে হবে।
-হ্যালো অধরা,
-হ্যাঁ আবির বলো।
-তোমাকে খুব মিস করছি আমি অধরা।
-আই মিস ইউ টু আবির।
-তোমাকে খুব দেখতে ইচ্ছে করছে।
দেখা করবে আমার সাথে একটু?
প্লিজ।
-কিন্তু আমার তো ক্লাস আছে।
-ওহ তাহলে আমার চেয়ে তোমার কাছে তোমার ক্লাস বড় হয়ে গেলো?
-আচ্ছা বাবা ঠিকাছে আমি স্কুল ড্রেস টা পড়েই বের হচ্ছি।
অধরা আবিরের সাথে দেখা করতে যায়।
-উফফ তোমাকে আজ যা সুন্দর লাগছেনা।
-ধন্যবাদ।
এবার বলো এত দেখতে ইচ্ছে করছিলো কেন হঠাৎ?
-ভালবাসি যে।
-আমিও খুউউব ভালবাসি।
-চলো এবার,
-কোথায়?
-আমার বন্ধুর বাসায়,
-ও আজ তোমাকে আর আমাকে দাওয়াত করেছে।
-আজ না অন্য কোন সময় যাবো,
সামনে এক্সাম আমার।ক্লাসে এটেন্ড করা খুব দরকার।
-আচ্ছা যাও,আমার কথার কি কোন দাম আছে নাকি তোমার কাছে।আমার বন্ধুর কাছে আজ আমার ছোট হতে হবে।
বলবে,তোর গফ আসেনি,তারমানে ও তোকে বিশ্বাস করেনা।
-আচ্ছা বাবা চলো।
এত মন খারাপ করতে হবেনা।
-চলো।
আবির অধরাকে ওর বন্ধুর বাসায় নিয়ে যায়।
-কিরে এসেছিস?
-হুম এসেছি।
-ভাবী ভালো আছেন?
-জ্বী ভাইয়া।আপনি?
-আমিও ভালো।
-আচ্ছা আপনারা বসুন,আমি একটু আসছি।
-আচ্ছা ঠিকাছে।
-আমিও একটু আসছি,তুমি বসো।
অধরা খাটে গিয়ে বসে।
বাসায় কেউ নেই।
অধরার যেন কেমন লাগলো।
একটু পরে আবির আসে।
-ওকে খাবার কিনে আনতে পাঠালাম।
-এ বাসায় দেখছি কেউ নেই।
উনার মা বাবা আর সবাই কই?
তুমি না বললে উনি তোমাকে দাওয়াত করেছেন?
-এ কথা না বললে তুমি আসতে?
-মানে কি আবির?
-মানে হচ্ছে,তোমার তিল টা দেখতে খুব ইচ্ছে করছিলো।তাই তোমাকে এখানে নিয়ে এসেছি।
-ছিঃ এত বড় মিথ্যা কথা বললে তুমি আমাকে?
-তুমি আমাকে বিশ্বাস করোনা তাইনা?
-আমি তোমাকে বিশ্বাস করি,কারণ বিশ্বাস ছাড়া ভালবাসা হয়না।
তবে এ তিল আমি তোমায় এখন দেখাতে পারবোনা।
যা দেখার বিয়ের পর দেখো।তখন আমার উপর তোমার পুরোপুরি অধিকার থাকবে।
-আমার বুঝার দরকার বুঝা হয়ে গেছে।তুমি আমাকে বিশ্বাস ই করোনা।
-আবির আমি বাসায় যাবো প্লিজ।
চলো বাসায় চলো।
-একটু পরে যাবো।
-না আমি এখনো যাবো চলো।
-তাহলে তিল দেখাতে হবে যে।
-আবির প্লিজ খুব বেশি বাড়াবাড়ি হয়ে যাচ্ছে কিন্তু।
-কিসের বাড়াবাড়ি? তুই আমাকে ভালবাসিস না?আমিও বাসি।তাহলে আমি কেন তোর বুক দেখতে পারবোনা?
-কারণ আমরা স্বামী-স্ত্রী হইনি এখনো।
-তুই আমাকে জোর করতে বাধ্য করবি?
-তুমি আমার সাথে জোর যবরদস্তি করবে?
-প্রয়োজনে আমি তাই করবো।ইজিলি যদি কিছু না ই হয়।
-এই তোমার ভালবাসা?
-আমি তো বলিনি আমি তোমায় বিয়ে করবোনা।আমি তোমায় বিয়ে করবো অধরা।কেন বুঝতে পারছোনা?
-আমি কিচ্ছু বুঝতে চাইনা,তুমি আমাকে যেতে দাও প্লিজ।
-সরি অধরা,আজ আমি তোমাকে যেতে দিবোনা।
আমার ইচ্ছে পূরণ না করা অব্ধি।
-প্লিজ তোমার পায়ে পড়ি,আমাকে যেতে দাও।
আমরা কয়েক দিনের মধ্যে বিয়ে করে নেবো।তারপর তুমি যা ইচ্ছে করো।
-আমার তোমাকে এখন লাগবে এখন।
আর চিল্লাচিল্লি করার চেষ্টা করলে তোমারই লস।লোক জানাজানি হবে,সবাই বলবে ওমুকের মেয়ে এক ছেলের সাথে খারাপ কাজ করে ধরা পড়েছে।
অধরা কাঁদছে আর বার বার আবিরের পায়ে ধরছে।
ক্ষমা চাচ্ছে,কিন্তু আবিরের মনে দয়া হয়নি।
আবির ঝাঁপিয়ে পড়ে নরপশুর মত অধরার শরীরের উপর।
খুবলে খুবলে খায় অধরাকে।
অধরার বুক ফাঁটা আর্তনাদ আবির শোনেনি।
শরীরের পিপাশা না মেটা পর্যন্ত ছাড়েনি আবির অধরাকে।
অনেক ক্ষণ পর যখন অধরার ব্লিডিং শুরু হয় তখন আবির অধরাকে ছেড়ে দেয়।
অধরার নিথর দেহ পড়ে থাকে খাটের উপর।
কিছু ক্ষণ পর যখন অধরার জ্ঞান ফিরে অধরা কাঁদতে থাকে।
আর আবির অধরাকে বোঝাতে থাকে,
-কাঁদেনা লক্ষী আমার,আমরা ক দিন পরই বিয়ে করে নেবো।
স্ত্রীর মর্যাদা দেবো আমি তোমায়।
প্লিজ কেঁদোনা।
টিস্যু দিয়ে রক্ত মুছে দিয়ে অধরাকে আবির জামা কাপড় পরিয়ে দেয়।
অধরা কোন কথা না বলে বাসা থেকে বেড়িয়ে আসে।
আবিরের বন্ধু আবিরকে ইশারায় বলে,
-কাজ সাক্সেস তো?
আবির মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ বলে।
অধরা একটা রিক্সায় করে বাড়ী ফিরে যায়।
আজ নিজেকে খুব ঘৃণা হচ্ছে।
নিজেকে শেষ করে দিতে ইচ্ছে করছে অধরার।
অধরার মনে বার বার প্রশ্ন জাগছে।
এটাকে কি ভালবাসা বলে?
অধরা বাথরুমে ঢুকে গোসল করে নেয়।
একবার মায়ের মুখ দেখে,
একবার ভাই বোনের মুখ দেখে।
আর চলে যায় নিজের রুমে।
আয়নায় নিজের চেহারা টা দেখে।
খুব ঘৃৃণা হচ্ছে নিজের প্রতি।
এই নষ্ট শরীর আর মুখ কাউকে দেখানোর অধিকার নেই।
কাউকে না।
মা বাবা ভাই বোন দের আদর ভালবাসার মুহূর্ত গুলো অধরা চোখ বন্ধ করে মনে করে কিছু ক্ষণ।
আর তারপর একটা চেয়ার নিয়ে ওর গায়ের উড়নাটা ফ্যানের সাথে বেধে নেয়,
চলবে...
ভুল ভালোবাসা! পর্ব-০২ ভুল ভালোবাসা! পর্ব-০২ Reviewed by গল্প প্রেমিক on 3:22 PM Rating: 5

No comments