অহংকারী মেয়ে! পর্ব-০৪
![]() |
অহকারী মেয়ে |
-ফেইস টা নিয়ে ভাবিনায়
-হুমম ইচ্ছা হলে ভাবতে পারো
-মানে?
-বলতেছি ইচ্ছা হলে এই হাত ধরে হাটতে পারো(জুই হাতটা বাড়িয়ে)
ভালোই তো রোমান্স হচ্ছে(পিছন থেকে এনি)
-ত ত ত তুই?(জুই)
.
-ডিস্টার্ব করলাম নাকি?
-কে বলল?(জুই)
-তাহলে এত অবাক হচ্ছিস যে?
-কিসের জন্য আসছিস বল।
-তুই আমার বান্ধবী সেটা আমার ভাবতেও কেমন জানি লাগছে।
-কেন?
-তুই এমন সস্তা মনের জানা ছিলো না
-আরে আমি কি করলাম?
-তুই আমার বাড়ির কাজের ছেলের সাথে প্রেম করতে চাচ্ছিস সেটা দেখে বমি বমি ভাব হচ্ছে।
-কেন রে? ও কিভাবে কাজের লোক?
-হি হি হি ও কাজের লোক না?
ঐ ছ্যাচরা যা তো নিচ থেকে কিছু খাবার নিয়ে আয়।
শান্ত তখন দাড়িয়ে থাকে।
-ঐ তোরে কি বলছি?
তারাতারি যা বলছি না হলে খারাপ হবে,
-যাচ্ছি।
শান্ত তখন নিচে যায়।
-জুই তুই এসব করবি আমি ভাবতেই পারছিনা
-ও কি দেখতে সুন্দর না?
-হ্যা সুন্দর বাট তার চেয়েও সুন্দর ছেলে আছে,
-তার চেয়ে সুন্দর কয়টা ছেলে আছে? আমাদের ফ্রেন্ডসিপের মধ্যে ও তার মতো একটা ছেলে নেই
-ছি তোর নজর এমন নিচ জানতাম না বলে এনি নিচে নেমে যায়।
তার কতক্ষন পরে জুই ও নিচে নেমে যায়।
জুই নিচে গিয়ে দেখে এনি সোফায় বসে আছে আর বাকি সবাই নাচানাচি করছে।
এমন সময় শান্ত নিচ থেকে এনির কথা মতো সবকিছু নিয়ে তাদের রুমে প্রবেশ করে।
রুমে প্রবেশ করার সাথে সাথে..
কয়েকটা থাপ্পর দিয়ে এনি বলে,
-তুই এই রুমে আসার সাহস পেলি কিভাবে?(এনি)
-স্যরি,
-এই ছোটলোকের বাচ্চা এখানে যাদের দেখতে পাচ্ছিস তাদের জুতোটার মতো ও হতে পারোস নাই।
-হুমম জানি বলে শান্ত চোখ দিয়ে দু'ফোটা পানি ফেলে তার রুমে চলে যায়।
-জুই এটা দেখেও কোনো প্রতিবাদ করতে পারে নাই,জুই জানে এনি বদমেজাজি। কোন সময় কি করে বলা যায় না।
পার্টি শেষ হওয়ার পরে রুম থেকে শান্তকে ডেকে এনে সবকিছু গুছাতে বলে,শান্তও তখন সবকিছু ঠিকঠাক করে শান্ত নিজের রুমে গিয়ে ঘুমিয়ে থাকে।
২দিন পরে ভার্সিটিতে যাওয়ার পরে জুই শান্তকে দেখে শান্তর কাছে আসে।
-কেমন আছো?(জুই)
-আলহামদুলিল্লাহ্, তুমি?
-আমিও ভালো,এনি আর কিছু বলছে?
-ও প্রতিদিন'ই আমার সাথে এমন করে।
-আর তুমি সব সহ্য করে নাও।
-এছাড়া আর কি করার আছে?
আমার মতো লোক তো আর কারোর অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে পারবে না।
-আমি স্যরি।
-কেন?
-আমার জন্যই তো ঐদিনের ঘটনা টা হলো।
-আরে এটা কি বলছো? আল্লাহ্ কপালে রাখছে তাই হয়েছে।
-নাহহহ,
-একটা প্রবাদ আছে"যদি থাকে নসিবে আপনা-আপনি আসিবে "
-এই প্রবাদটা কি পুরোপুরি সত্যি?
-হ্যা(শান্ত)
-নাহ একদম পুরো সত্যি না।
-কিভাবে?
-মনে করো একটা চোর কোনো বাসায় চুরি করতে গেলো।বাসা থেকে সবকিছু বের করে যদি চোর টা বাড়ির কাছে বসে থাকে,সকালে কিন্তু চোরকে ধরে ফেলবে এবং মারবে। চোর যদি তখন বলে এটা আমার ভাগ্যে ছিলো তখন কি সেটা ঠিক হবে? আল্লাহতায়ালা বলেছে তুমি চেষ্টা করো,তুমি যদি একটা জিনিসের জন্য মন দিয়ে চেষ্টা করো তাহলে ইনশাল্লাহ কাজটা সাক্সেস হবেই। হ্যা আমি আবার পুরোপুরি কাজের কথাও বলবো না। সব কিছুর ক্ষেত্রে কর্ম আর ভাগ্য দুইটা দুইটার উপর নির্ভরশীল।
আল্লাহ্ বলেছে তুমি চেষ্টা করো আমি দেওয়ার জন্য প্রস্তুত।
-হ্যা তোমার কথায় যুক্তি আছে।
-তুমি চেষ্টা করো, ইনশাল্লাহ পারবেই
-ওকে, এখন ক্লাসে যাবা না?
-হুমম যাবো, তুমি আলাদা যাও না হলে এনি আবার উল্টা-পাল্টা ভাববে।
-ওকে.....
শান্ত ক্লাস শেষ করে বাসায় ফিরে।
-ক্লাস কেমন চলছে?(এনির বাবা)
-জি আংকেল ভালো
-রেজাল্ট টা ভালো কইরো বাবা।
-আংকেল দোয়া করবেন।
-বাবা তোদের জন্য দোয়া না করলে কার জন্য করবো রে?
সামনে ফাইনাল ইয়ারের পরীক্ষা, পূর্বের মতো আবারো সবাইকে পিছনে ফেলে তুই এগিয়ে যাবি।
-জি আংকেল।
-ফ্রেশ হয়ে খেতে আয়।
শান্ত সন্ধ্যায় মাগরিবের নামাজ পরে ছাদে বসে আছে এমন সময় জুই ফোন দেয়।
-কি করো?(জুই)
-এইতো ছাদে বসে আছি,তুমি?
-রুমে বসে আছি
-ওহহ
-হ্যা,এনি কোথায়?
-বাসায় ই
-ওহহ
-হ্যা
-কালকে ফ্রি আছো?(জুই)
-হ্যা, কেন?
-আমার সাথে এক জায়গায় যেতে পারবে?
-কোথায়?
-নদীর পাড়ে হাটবো
-কোন সময়?
-বিকালে
-ওকে...
পরেরদিন বিকালে জুই এর সাথে ঘুরতে বের হয়।
নদীর পারে দু'জন একসাথে হাটছে আর কথা বলছে এমন সময় জুই হঠাৎ শান্তকে প্রশ্ন করে
-আমাকে তোমার কেমন লাগে?
-ভালো-ই লাগে
-ই হিসাবে কেমন লাগে
-কি হিসাবে?
-বুঝনাই?
-বুঝলে কি আবার প্রশ্ন করতাম?
-আমাকে বউ হিসাবে কেমন লাগবে?
-লাল শাড়িতে হেব্বি মানাবে।
-ওহহহ শিট
-কি?
-ভালোবাসি 💚
-কাকে?
.
-আমি তোমাকে ভালোবাসি।
-তোমার মাথা ঠিক আছে?
-হ্যা আমি ঠিক আছি।
-ঠিক থাকলে এই কথা কিভাবে বলতে পারলা?
-শান্ত(রাগি চাহনি তে)
-হ্যা বলো..
-সত্যিইই অনেক ভালোবাসি।
-এসব আবোল-তাবোল না বলে বাসায় গিয়ে রেস্ট নাও।
-তোমার সাথে ঘুরতে বের হইছি, আরো রাত হোক তারপর যাবো বলে শান্তর হাত ধরে ফেলে।
-শান্ত তখন জুই এর দিকে চেয়ে দেখে জুই শান্তর দিকে চেয়ে আছে আর মুচকি হাসছে।
-বলো নাহহহহহ
-কি বলবো?
-বলো জুই আমিও তোমাকে ভালোবাসি।
-বললে কি হবে?
-আমাদের ছেলে-মেয়ে হবে।
-ভালোবাসি বললে ছেলে-মেয়ে হয় এটা আজ প্রথম শুনলাম।
-বলো না,
-ভালোবাসি।
তখন জুই হাটার মাঝে একটু উকি মেরে ঠোঁটে একটা কিস করে, লজ্জা পাওয়ার মতো করে নিচে চেয়ে থাকে।
-এই এটা কি করলা?
-কি করছি?
-কিস করার কথা আমি আর কিস করছো তুমি।
-তোমাকে করতে না করছে কে?
-থাক এখন করবো না।
-কেন?
-এমনিতে,
-না না এখন করতে হবে।
এভাবে সেদিনের মতো কথা বলে তারা তাদের বাসায় চলে যায়।
বাসায় যাওয়ার পরে.......
-আজ এতক্ষণ কোথায় ছিলি?(এনি)
-বন্ধুর বাসায়(শান্ত)
-কোন বন্ধু?
-আমার যে কোনো বন্ধুই থাকতে পারে তাইনা।
-এটা-ই তো, সেটা ছেলে না মেয়ে?
-অবশ্যই ছেলে,
-ওকে যাহ,
শান্ত রুমে গিয়ে ভাবতে থাকে.... জুইকে লাল শাড়ি পরলে আসলেই মানাবে। মেয়েটা অনেক ভালো,ওর চেহারায় মায়া আছে ঠিক তখনি জুই এর ফোন আসে।
-কি করো(জুই)
-শুয়ে শুয়ে কারো কথা ভাবছি..(শান্ত)
-এই এই কার কথা?
-কার আবার, এখন আমার সাথে যে কথা বলছে তার কথা ভাবছি।
-সত্যিইইইই?
-হুমম।
-এই এই কি ভাবছো বলো না।
-ভাবছি তোমাকে বিয়ে করবো।
-কুত্তা না করলে তোর খবর আছে।
এভাবে আরো অনেক্ষন কথা বলে।
পরেরদিন শান্ত নীল পান্জাবি পরে ভার্সিটিতে যায়।
জুই ক্যাম্পাসে অনেকক্ষন হয় অপেক্ষা করছে।
শান্ত যাওয়ার সাথে হাসি দিয়ে চোখ টিপ মারে।
শান্ত তখন জুই এর দিকে চেয়ে শান্ত ও চোখ টিপ মারে।
-ক্লাস শেষে আজকে একজায়গায় যাবো।(জুই)
-কোথায়?
-ঐ পাশের এলাকায় একটা লেক আছে অনেক সুন্দর।
-ওকে,
ক্লাস শেষে দু'জনে ওখানে গিয়ে বসে।
শান্ত বসার পর জুই শান্তর কাধে মাথা রেখে বসে পরে।
-তোমার সাথে কিছু কথা আছে।(শান্ত)
-এখানে তো কথা বলার জন্যই আসছি, বলো(জুই)
-আমাকে কি তুমি সত্যি ভালোবাসো নাকি আমার সাথে খেলা করছো?
-শান্ত তুমি আমার জীবনের প্রথম ভালোবাসা,আমি তোমাকেই ভালোবাসি।
-আমার জীবন সমন্ধে তুমি মনে হয় সব কিছুই জানো
-হ্যা না জেনে কি ভালোবাসছি নাকি?
-সব জেনে শুনেও ভালোবাসবা?
-হ্যা, সারাজীবন ভালোবাসতে চাই বলে জুই শান্তকে জড়িয়ে ধরে বুকে মাথা রাখে।
-কেউ দেখবে তো।
-দেখলে আরো ভালো হবে।
-কেউ দেখলে ইচ্ছামতো মারবে।
-মারলেও ভালো, মারার পরে দু'জনের বিয়ে দিয়ে দিবে
-ওমাহহহ, এত বুদ্ধি?
-তখন জুই হেসে দেয়।
-এই একটা ই দাও(জুই)
-কি?
-কিস করো।
-এই জায়গায়?
-হ্যা,ভয় পাও নাকি?
-কেউ দেখবে তো।
-দেখবেনা।
-দেখলে প্রবলেম হবে।
জুই তখন শান্তর মুখটা কাছে এনে কয়েক সেকেন্ডে কয়েকটা কিস করে দেয়।
শান্ত আর জুই এভাবে কতক্ষণ থাকার পর বাসার উদ্দেশ্যে যায়।
শান্ত বাসায় যাওয়ার পরে......
-ক্লাস কখন শেষ হয়েছে?(এনি)
-সেটা তো তুমিও জানো।
-ক্লাস শেষ হয়েছে ৩ঘন্টা আগে, এতক্ষণ কোথায় ছিলি?
-যেখানেই যাই সেটা তোমার জানতে হবে না।
-এই বাড়িতে তুই কি হিসাবে থাকিস?
-আংকেল আন্টির ছেলের মতো হয়ে।
-হি হি হি,,
-হাসার কি আছে?
-এটা না বলে বল বিশ্বস্ত চাকর।
-তুমি যেটা মনে করো সেটাই বলে শান্ত তার রুমে চলে যায়।
তার ১০-১৫ মিনিট পরে এনি শান্তর রুমে যায় কিছু বাজার আনানোর জন্য।
এনি রুমে যাওয়ার পরে শান্তর মোবাইল থেকে একসাথে দুইটা মেসেন্জারের নটিফিকেশনের সাউন্ড আসে।
এনি তখন শান্তর মোবাইল টা হাতে নিয়ে যা দেখলো তা দেখে তার মাথা নষ্ট হয়ে যাওয়ার মতো।
এনি দেখে জুই এর আইডি থেকে.........
অহংকারী মেয়ে! পর্ব-০৪
Reviewed by গল্প প্রেমিক
on
3:57 PM
Rating:

No comments