বোনের বান্ধবীর সাথে প্রেম! পর্ব-০৬ (শেষ পর্ব)
গল্পঃ (বোনের বান্ধবীর সঙ্গে প্রেম)
(পর্ব-৬ শেষ পর্ব)
রুমে এসে ফোন টিপতেছি। কিছুক্ষণ পর দেখলাম রাইসা ভয়ে ভয়ে রুমে ডুকছে।
-কোথায় গিয়ে ছিলে (একটু রাগি সুরে বললাম।
-কই কোথাও না তো (কাঁপা কাঁপা কন্ঠে)
আমি চেয়ার থেকে দাঁড়িয়ে রাইসার কাছে গেলাম। রাইসা ভয় পেয়ে পিছন দিকে এক পা বারালো।
-ভয় পাইছো?
-হুমমমম (কাঁদো কাঁদো কন্ঠে)
-আমাকে ভয় পাওয়ার কি আছে। (মুচকি হাঁসি দিয়ে বললাম।)
-কই না,, এমনি (কাঁদো কাঁদো কন্ঠে)
-আচ্ছা আজকে কি রান্না করেছো? (ধির কন্ঠে)
-মুরগীর রান।
-কি মুরগির ঠেং? (হেঁসে হেঁসে)
পাগলীটা আমার হাঁসি দেখে নিজে হেঁসে দিচ্ছে।
আমি বললাম খাবারটা নিয়ে আসেন মহারানী।
রাইসা আমার কথা মতো। টেবিলে খাবারটা রেখে দিয়ে। আমার কাছে এসে বসেছে।
আমি রাইসাকে বললাম।
-খাইয়ে দিবে না? (করুন সুরে)
-সত্যি বলছো (কাঁদো কাঁদো কন্ঠে)
-হুম সত্যি বলছি।(মুচকি হাঁসি দিয়ে)
রাইসা আমাকে খাইয়ে দিচ্ছে। আর নিজের চুল গুলো ঠিক করছে। আমি ওর দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছি।
রাইসা আঙ্গুলে একটু কামর দিলাম আস্তে করে।
-উফফফ (কাঁদো কাঁদো কন্ঠে বললো কি করলে এইটা)
-সরি
-আর সরি বলতে হবে না। (কাঁদো কাঁদো কন্ঠে)
-রাগ করেছো?
-না
রাইসা আমাকে খাইয়ে দেওয়া শেষ করে।
দুজনে হাত ধুয়ে এসেছি।
রাইসা এখন খাটের এক কোনে বসে বসে বই পরতেছে। আর আমি ফোন টিপছি। আমি যানি রাইসা আমাকে দেখানোর জন্য বই পরছে। আসলে ও আমার দিকে তাকিয়ে আছে।
আমি রাইসাকে বলে উঠলাম।
-রাইসা
-হুমমমম
-এখানে একটু আসবে।
-আচ্ছা
রাইসা আমার কাছে এসে দাঁড়িয়ে আছে।
-রাতের খাবার খাইছো?
-হুম খেয়েছি তো। (ধির কন্ঠে)
-সত্যি বলছো?
-হুম
এবার একটু রাগি ভাবে রাইসার দিকে তাকালাম।
-সত্যি খাবার খাইছো। (রাগি কন্ঠে বললাম)
-হুমম
এবার ধমক দিয়ে বললাম। রাইসা ভয়ে বলে দিলো।
-না
-তাহলে বললে কেন। খেয়েছি?
-এমনি
খাবারটা নিয়ে আসো বলছি......
রাইসা আমার দিকে তাকিয়ে আছে।
-কি তাকিয়ে আছো। নিয়ে আসো বলছি।
রাইসা খাবার নিয়ে এসে খাটে বসে আছে।
আমি বললাম ওই এই চেয়ারে এসে বসো।
রাইসা তাই করলো।
এবার বললাম খাবারটা খেয়ে নেও।
-হুমমমম
রাইসা খাবার টুকটুক করে খাচ্ছে।
আমি বললাম আর খাওয়ার চেষ্টা করতে হবে না মহারানী। আমি খাইয়ে দিচ্ছি।
এবার রাইসা চেয়ার থেকে উঠে এসে আমাকে জরীয়ে ধরে হাউমাউ করে কেঁদে দিলো।
-ওই পাগলী কান্না করছো কেন?
রাইসা কিছু না বলে আমাকে আরো শক্ত করে জরীয়ে ধরেছে আমিও রাইসাকে শক্ত করে জরীয়ে ধরলাম। রাইসার চোখের জল মুছে দিলাম।
আর মনে মনে ভাবলাম। পাগলী একটা আর কক্ষনো কষ্ট দিবো না। খুব ভুল হয়ে গিয়েছে আমার।
রাইসাকে চেয়ারে বসিয়ে দিয়ে। খাবার খাইয়ে দিচ্ছি।
রাইসা কান্না করতে করতে খাবার খাচ্ছে।
-রাইসা ভাবছে। ওর কি হয়েছে?
আগের আসাদ ফিরে এসেছে। ভাবতেই খুশি লাগছে।) অনেক কান্না করেছে রাইসা কিন্তু আসাদ দেখেও না দেখার ভান করেছে। সারাদিন না খেয়ে বসে থাকলেও খাইছো কিনা জিগ্যেস করতো না। আজকে আসাদ রাইসার চোখের জল মুছে দিয়েছে। আর খাইয়ে দিচ্ছে।
খাইয়ে দেওয়া শেষ করে রাইসাকে হাত ধুয়ে নিয়ে আসলাম।
রাইসা এবার খাঁটের এক কোনে বসে বই পরছে। আর আমি টেবিলে বসে ফোন টিপছি।
আমি চেয়ার থেকে উঠে রাইসার কাছে গিয়ে বসলাম। রাইসা বই দিয়ে নিজের মুখ লুকালো।
-রাইসা
-হুমমম
আমি বইটা ওর হাত থেকে নিয়ে সাইটে রেখে দিলাম।
-তুমি ওই পিচ্চিদের পড়াও বলোনি কেন? (মুচকি হাঁসি দিয়ে।)
এবার রাইসা কাঁদো কাঁদো কন্ঠে বললো।
-মানে......
-হুম সব দেখেছি। সরি বাবু অনেক সরি আর কক্ষনো তোমাকে কষ্ট দিবো না।
-সত্যি বলছো তো।
-হুম
-যানো আমার কত্ত কষ্ট হতো তুমি আমার সাথে খারাপ আচারণ করতে যখন।
-সরি বাবু। এই দেখো কান ধরেছি।
রাইসা এবার হেঁসে দিয়েছে। রাইসা চোখের পানি মুছতে মুছতে আমার গাল টেনে দিলো।
-উফফফ কি করলে এই টা দাঁড়াও তোমাকে দেখাচ্ছি।
রাইসা উঠে দরজা দিয়ে হেঁসে হেঁসে পালিয়ে যাচ্ছিলো। বাট ওকে আমি আমার বুকে জরীয়ে নিলাম। আর কক্ষনো ছারবো না। আর কক্ষনো কষ্ট দিবো না।
রাইসা আমার সামনে দাঁড়িয়ে এখন। রাইসা বলে উঠলো। একটা কথা বলবো?
-হুম বলো।
-চলো না বাসায় চলে যাই আমরা।
-কিন্তু
-কিন্তু কি?
-আব্বু আম্মু কি মেনে নিবে আমাদের?
-চলোই না। প্রায় ১বছর হয়ে এসেছে হয়তো মন গলে গেছে !
-আচ্ছা তাহলে কাল সকালে আমরা বাসায় যাচ্ছি।
-সত্যি বলছো (রাইসা খুশি হয়ে কথাটা বললো আমাকে।)
-হুম তিন সত্যি।
এবার আমি রাইসাকে কোলে তুলে নিলাম।
-ওই কি করছো এইসব?
-কেন কি করলাম।
-কোলে তুললে কেন? (আমার কলারটা টেনে ধরে)
-আদর করবো তাই।
-ওহ এই না। একদম না কোল থেকে নামাও বলছি।
আমি রাইসার কথা শুনলাম না। রাইসাকে খাঁটে নিয়ে গিয়ে সুয়ে দিলাম। তারপর আমরা দুষ্টুমিতে মেতে উঠলাম।
অনেক ভোরে আজানের আওয়াজে আমার ঘুম ভাঙ্গলো। আমি ওজু করে মসজিদে গিয়ে নাজাম পড়ে এসে। রুমে ডুকে দেখি রাইসা নামাজ পড়ছে। রাইসাকে খুব মায়াবী লাগছিলো তখন।
সকাল সকাল নাস্তা করে আমরা রওনা দিলাম। আঙ্কেল আন্টিদের অনেক মিছ করবো।
আমরা সেই ট্রেনে আবার চরলাম। খুব চিনা চিনা লাগছে। আর খুব হাঁসি পাচ্ছে। আমরা পালিয়ে এসেছিলাম এই ট্রেনে করে।
আবার ফিরে যাচ্ছি এই ট্রেনের রাস্তা দিয়ে।
গ্রামের রাস্তায় আমরা হাঁটছি খুব চিনা চিনা জায়গা গুলো। গ্রামের মানুষ অনেকে আমাদের নিয়ে মজা করছে আর কেউ বলছে। কেমন আছিস ভাই।
বাসায় এসেই আমি আব্বুর সামনে পরে গেলাম। রাইসাকে ইসারা করলাম। সালাম করতে। রাইসা তাই করলো। আব্বু রাইসার মাথায় হাত দিয়ে। বাসা থেকে বের হয়ে চলে গেলো।
তারপর দেখলাম আম্মু।
-আসাদ তুই।
-হুমমম কেমন দিলাম আম্মু।
-এক থাপ্পড় দিবো আগে রুমে আয়।
আমি আর রাইসা হাত মুখ ধুয়ে। আমরা রুমে গেলাম।
খুব চিনা চিনা লাগছে আমার রুমটা,,
কিছুক্ষণ পর দেখলাম বোন দৌড়ে আমাদের রুমে আসলো।
-ভাইয়া ভাইয়া তুমি এসেছো?
-দেখতে পাচ্ছিস না। বান্দরনী একটা।
-ওই বাদর আমাকে বান্দরনী বলবি না।
-তাহলে কি বললো কাউয়া।
-রাইসা দেখো না ভাইয়া কি বলছে। সরি ভাবি। (মিতু)
রাইসা কিছু না বলে আমাদের দুজনের খুনসুটি দেখে হাঁসছে।
এবার মিতু আমাকে কান্না করতে করতে জরীয়ে ধরে বলতে লাগলো। ভাইয়া তুমি আর ভাবি কোথাও যাবে না আর, বলে দিলাম।
-আচ্ছা আর যাবো না। যাওয়ার জন্য এসেছি নাকি।
এবার রাইসা আর মিতু দুজনে গল্প করছে আর আমি। আব্বুর রুমে গেলাম। দেখলাম আব্বু নেই। ওহ হ্যাঁ আব্বু তো কিছুক্ষণ আগে বাইরে গিয়েছে। ভুলে গেছিলাম। আব্বু কি আমাদের মেনে নিয়েছে?
আম্মু বোন তো মেনে নিয়েছে
তবে আব্বু কি মেনে নিয়েছে?
.
.
.
-রাইসা (ছেলে)
-হুম বলো (মেয়ে)
-এত্তো সকালে কোথায় গিয়েছিলে?
-এইতো বাবাকে চা দিতে।
-মানে?
-মানে কি
-আব্বু কিছু বলেনি?
-না কিছু বলেনি। এই যে, তোমার চা রেখে দিয়েছি টেবিলে খেয়ে নেও।
-আচ্ছা খাচ্ছি। আর শুনো।
-কি বলবে বলো। (মুখ পাকিয়ে)
-আমার কাছে আসো।
-না একদম না। দুষ্টুমি করবে তুমি।
-আরে না।
তখন আব্বুর গলায় আওয়াজ পেলাম।
-ওই হারামিটা কি উঠেছে? (আব্বু)
-না বাবা (রাইসা)
-ওকে আচ্ছা করে ঠাড্ডা দেও বউমা। পালিয়ে যাবার সময় আমাদের কথা একবারো ভাবেনি।
-আচ্ছা বাবা দিচ্ছি।(রাইসা)
-ওই ওঠো বলছি। (হেঁসে)
-না আরেকটু ঘুমিয়ে নেই।
-না একদম না।
এবার রাইসা আমার কম্বল টেনে নিয়েছে।
-এবারো উঠবে না। (মুখটা গোমরা করে)
-উঠছি উঠছি। (অভিযোগ সুরে)
-খেয়ে নেও চা টা।
চা খেয়ে। বাইরে বের হতেই বোন, কাছে এসে বলছে ভাইয়া। আমাকে কলেজ রেখে আসো plz... -ওই পেত্নী আমি পারবো না।
-ওই কি পারবে না বলছে রে।(আব্বু রাগি সুরে ঘর থেকে বলছে।)
-দেখো না আব্বু ভাইয়া কলেজ নিয়ে যেতে চাইছে না আমাকে।(মিতু)
-পালিয়ে যাবার সময় তো অনেক দূরে চলে গিয়েছিলো। আর বোনকে কলেজ নিয়ে যেতে পারবে না।
এবার আমি চুপ করে দাড়িয়ে আছি।
মিতু হিহি করে হেঁসে বললো......
-এবার চলো ভাইয়া।
-আচ্ছা পেত্নী চল।
আমি মিতুকে কলেজ রেখে এসে।
বাসায় আসার সময় অনেকে অনেক কিছু বলছে।
মানুষ তো বলবেই। আমার কি যায় আসে যায়। এবার বন্ধুদের দেখতে পেলাম। ওদের কাছে গিয়ে। বলে উঠলাম কেমন আছিস ভাই।
-হুম ভালো আছি তোরা?
-তুই তো ভালোই থাকবি আমাদের রেখে।
-আরে না তোদের কথা খুব মিস করছিলাম।
-ওলে বাবারে এতো পাম দিতে হবে না।
সেদিন তো জানালার দিকে তাকিয়ে ছিলি। তার কয়দিন পর চলে গেলি। আর কোথাও তাকাবি না। তোকে আর হারাতে পারবো না।
আমি মুচকি হাঁসি দিয়ে বললাম আচ্ছা আর কোথাও যাবো না। তোদের ছারা।
-তোর কোনো বিশ্বাস নেই।
-আরে সত্যি বলছি। আর কেন বা পালিয়ে যাবো বল। ভালোবাসার মানুষকে তো পেয়ে গেছি।
-ও আচ্ছা।
তোর ভালোবাসার মানুষ তো রাইসা তাইনা?
-হুম তোদের ভাবি।
-হুম রে আমাদের ভাবি। খুব ভুল করেছি। রাইসা বলে। আচ্ছা এবার ক্রিকেট খেলি চল।
-আচ্ছা।
এখন কিছুটা ঠান্ডা পরেছে। আকাশে একটু একটু রোদ।
আমি বন্ধুদের সঙ্গে ক্রিকেট খেলে বাসায় এসে দেখি। রাইসা আয়নার সামনে বসে বসে গুনগুন করে গান গাইছে।
আমি চুপটি করে রাইসাকে পিছন থেকে জরীয়ে ধরলাম।
-ওই কি করছো। (রাইসা)
-কি করলাম আবার?
-ছারো বলছি।
-না
-কেন না?
-এমনি। আদর করবো তাই।
-ওই একদম না।
তারপর আমি রাইসাকে কোলে তুলে নিলাম।
ডুব দিলাম অতল সাগরে। যা দেখার দরকার নেই আপনাদের।😛
.............................সমাপ্ত...................................
বোনের বান্ধবীর সাথে প্রেম! পর্ব-০৬ (শেষ পর্ব)
Reviewed by গল্প প্রেমিক
on
10:02 AM
Rating:
No comments