এক টুকরো চোখের জল! পর্ব-১০

গল্পঃ #এক_টুকরো_চোখের_জল
(পর্ব-১০)
-বাবু দেখো আমি শুধু তোমায় ভালোবাসি এমন করো'না প্লিজ।
-,,,,,,,,,,
-দেখো রিফাত সবকিছু যানে। তুমি চাইলে কালকে ডিভোর্স দিয়ে দিবো। প্লিজ বাবু এমন করোনা।
-সরি হাওয়া, তোমার জন্য একটা ছেলের জীবন নষ্ট করতে পারবোনা আমি। দয়া করে ক্ষমা করে দেও আমাকে। আমাকে ভুলে যাওয়ার চেষ্টা করো ,এতেই তোমার ভালো।
-কি'সব বলছো? আমি শুধু তোমায় ভালোবাসি। আজকে সকালেই তো মিষ্টি মিষ্টি কথা বলছিলে, কই গেলো মিষ্টি মিষ্টি কথা গুলো।
-,,,,,,,,,,
-চুপ আছো কেন? উত্তর দেও,
-হাওয়া দেখো। তুমি কিন্তু অন্য একজনের বউ। আমি পরপুরুষ এখন। এমন করোনা প্লিজ। রিফাতকে নিয়ে তুমি ভালো থেকো।
কথাগুলো বলেই আনিছ ফোনটা কেঁটে দেয়। হাওয়া অনেকবার আনিছের ফোনে কল দেওয়া চেষ্টা করে তবে বন্ধ পাচ্ছিলো।
এদিকে রিফাত রুমে চলে এসেছে। রিফাত রুমে আসতেই হাওয়া রিফাতের কলার ধরে বলতে থাকে।
-রিফাত দেখ, তোকে আমি বন্ধুত্বে ভালোবাসি। বেশিকিছু আসা করবি না দয়া করে।
(রিফাত হাওয়ার দিকে অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে।)
-কি বলছিস এইসব হাওয়া।
-আমি যা বলছি তাই। আরেকটা কথা শোন। তুই যদি আমাকে ভালোবেসে থাকিস তাহলে সেটা ভুলে যা। আমি শুধু আনিছকে ভালোবাসি ওকে।
তুই আমাদের মাঝে বাধ্যা হয়ে দাঁড়াস'না দয়া করে। তোর জন্য আনিছ আমাকে অবহেলা করতে শুরু করছে।
রিফাত হাওয়ার মুখের দিকে অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। হাওয়া এইসব কি বলছে আমার জন্য, হাওয়া আর আনিছের সম্পর্কের মধ্যে ফাঁটল ধরেছে, মানে।
-এই হাওয়া কি সব বলছিস।
-যা বলছি ঠিকি বলছি আমাদের ভালোবাসার মধ্যে ফাটল ধরাতে আসবি'না দয়া করে।
হাওয়া যখন আনিছের সঙ্গে কথা বলে তখন আনিছের মায়ায় বার'বার পরে যায় হাওয়া। হাওয়া যে আনিছকে অনেক ভালোবাসে জীবনের থেকেও বেশি। তবে আনিছ কেন এমন করছে বুঝছেনা হাওয়া। হাওয়ার বুকটা কেঁপে কেঁপে উঠছে ভয়ে। হাওয়া যদি আনিছকে হারিয়ে ফেলে।
.
.
.
.
.
-হাওয়া অনেক রাত হয়ে গেছে সুয়ে পরবি চল।
-ওই একদম কথা বলবি না ওকে। ভালো লাগছে'না কিছুই। তুই গিয়ে সুয়ে পর। আমি পরে সুয়ে পরবো।
রিফাত আর কথা'না বাড়িয়ে বিছানায় গিয়ে সুয়ে পরে। রিফাত ভালোভাবে যানে হাওয়া কতটা রাগি মেয়ে। তাই আর কথা না বাড়িয়ে বিছানায় গিয়ে সুয়ে পরে রিফাত। আজকে কেন যানি আনিছকে হারানোর ভয় চেপে ধরেছে হাওয়াকে।
.
.
.
.
.
রিফাত ঘুমিয়ে পরেছে। এদিকে হাওয়া মেঝেতে বিছানা করে সুয়ে পরে। মাঝরাতে রিফাতের ঘুম ভেঙে যায়। রিফাত নিজের পার্শে হাত বুলিয়ে দেখে হাওয়া নেই। তাই হাওয়া হাওয়া বলে দুই তিনবার ডাক দেয়। তবে হাওয়া কোনো সারা'দেয় না। রিফাত মেঝেতে লক্ষ করে হাওয়া মেঝেতে শুয়ে আছে। ছোট্ট বিছানা করে, কোনোকিছু উড়ে নেয় মেয়েটা। ঠান্ডায় একটু একটু কাঁপছে। রিফাত বিছানা থেকে উঠে গিয়ে। জানালাটা লেগে দেয়। আর আলমারিতে থেকে একটা কালো জাদর হাওয়ার শরীলে উড়িয়ে দেয়।
হাওয়ার শরীলে চাদরটা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে চাদরটা জরীয়ে নেয় হাওয়া। ঘুমের মাঝে মেয়েটাকে অনেক সুন্দর দেখা'যাচ্ছে বলতেই হবে। ফ্যানের বাতাসে হাওয়ার চুল গুলো উড়ে উড়ে যাচ্ছে। রিফাত হাঁটু গেঁড়ে বসে হাওয়ার চুল গুলো ঠিক করে দেয়। এই ভালোবাসায় রিফাতের কোনো চাহিদা ছিলো। না ছিলো কোনো অভিমান। রিফাত মনে মনে ভাবতে থাকে। হাওয়া আমাকে ভালোবেসে বন্ধু'হিসেবে। আর আমি হাওয়ার বন্ধু হয়ে এভাবে কষ্ট দিচ্ছি ছিঃ ছিঃ।
.
.
.
.
ফজরের আজান দিচ্ছে। আজানের আওয়াজে রিফাতের ঘুম ভেঙে যায়। রিফাত আলমারি থেকে পাঞ্জাবি আর টুপি পড়ে নেয়। ওজু করে এসে হাওয়াকে ডাক দিতে শুরু করে।
-এই হাওয়া ঘুম থেকে উঠবি না।
হাওয়া কোনো উত্তর'ই দেয়'না। তাই এলাম ঘড়িটা হাওয়া কানের কাছে রেখে মসজিদে চলে যায় রিফাত। ১০ মিনিট পর এলাম বেজে উঠবে। আর এলামের আওয়াজে হাওয়ার ঘুম ভেঙে যাবে। তারপর রিফাতকে বোকাঝকা দিতে শুরু করবে হাওয়া। রিফাত তা ভালোভাবে যানে। তাই তো বুদ্ধি করে এলাম ঘড়িটা রেখে গিয়েছে রিফাত।
হ্যাঁ তাই হয়েছে। এলামের আওয়াজে হাওয়ার ঘুম ভেঙে যায়। তারপর রিফাতকে অনেক বকাঝকা দেয় হাওয়া। ওই কুত্তা বিড়ালটা কই। হাওয়া খেয়াল করে দেখে রিফাত রুমে নেই। হাওয়া বুঝে যায়। রিফাত মসজিদে চলে গেছে। হাওয়া নিজের মুখে দুইটা থাপ্পড় দিয়ে বলতে থাকে। ছিঃ হাওয়া কি বলছিস এইসব।
কালকে শুধু শুধু ছেলেটার উপর দোষ দিয়ে দিছিস। ওর তো এইসবে কোনো দোষ নেই।
তবে রিফাতের বুদ্ধি আছে বলতেই হবে। বকাঝকা খাওয়ার ভয়ে এলামঘড়িটা রেখে গিয়েছে। হাওয়া কথা গুলো ভাবতে ভাবতে মুচকি হেঁসে উঠে। হাওয়া ওজু করে এসে নামাজে দাঁড়ায়। নামাজ শেষে বিছানায় গিয়ে সুয়ে পরে হাওয়া।
.
.
.
.
.
-আসসালামু আলাইকুম,
-উলাইকুম আস্সালাম কে বলতেছেন?
-আমি রিফাত, আপনি আনিছ না? (আনিছ থতমত খেয়ে যায়। সেই অচেনা আওয়াজ। কিছুটা স্বাভাবিক হয়ে আনিছ উত্তর দেয়।
-জ্বি আমি আনিছ, কেন কি হয়েছে।
-আসলে বলতে চাইছি কি।
-থাক আর বলতে হবে না। হাওয়া আর আমার সম্পর্ক জোরা লাগাতে চাইছেন তাই তো? তা হবার না মিষ্টার রিফাত। আমি একজনকে ভালোবাসি। আর আপনি হাওয়াকে নিয়ে খুশি থাকেন। আর হাওয়াকে বলে দিয়েন। আমি ওর সাঙ্গে ছলনা করেছি এই একটি বছর। (আনিছ রিফাতের জন্য মিথ্যা কথাগুলো বলে।)
-বায় দ্যা ওয়ে, আপনি কেমন আছেন?
-জ্বি আলহামদুলিল্লাহ ভালো আপনি?
আনিছ মনে মনে বলতে থাকে।
-হুম ভালোই আছি। হায়রে বন্ধু তোর কন্ঠটা চিনে ফেললাম আমি। কিন্তু তুই আমার কন্ঠটা চিনলি'না।
-হ্যাঁ অনেক ভালো আছি। আচ্ছা রাখি। আর শুনেন, হাওয়াকে নিয়ে ভালো থাকেন। আর হাওয়াকে বলে দিয়েন। আমি ওর সঙ্গে ছলনা করেছি এতোদিন।
(কথাগুলো বলে আনিছ ফোনটা কেঁটে দেয়। রিফাতের কেন যানি কন্ঠটা খুব চিনা'চিনা মনে হয়েছে আজ। কিছুক্ষণ চিন্তা করে রিফাতের মনে পরে যায়। আরে এ তো আনিছ। আরে না ও কেমন করে হবে। ও তো একটা প্রতারক। এটা সেই আনিছ'না)
(চলবে?)
এক টুকরো চোখের জল! পর্ব-১০ এক টুকরো চোখের জল! পর্ব-১০ Reviewed by গল্প প্রেমিক on 1:35 PM Rating: 5

No comments

হৃদয়স্পর্শী গল্প

হৃদয়স্পর্শী গল্প