একট টুকরো চোখের জল! পর্ব-০৯

গল্পঃ #এক_টুকরো_চোখের_জল
(পর্ব ৯)
-এই রিফাত কোথায় তুই।
-এই তো স্কুলের পিছনে সিগারেট খাচ্ছি (কথাগুলো বলে নিজের জিহ্বায় কামড় দেয় রিফাত)
-মানে?
-না মানে, কই কিছুনাতো।
-তাড়াতাড়ি এখানে আয়।
-আচ্ছা যাচ্ছি একমিনিট দাঁড়া।
রিফাত স্কুলের পিছনের' দিকটাই গিয়ে সিগারেট খাচ্ছিলো। হাওয়া ফোন দিলে রিফাত হাওয়ার কাছে আসে।
-এই হাওয়া তোর আনিছ কোথায় রে,?
-চলে গেছে।
-কেন,
-কথা বলা শেষ তাই।
-কি কথা বললি রে, এতোক্ষণ থেকে,
-অনেককিছু তোকে শুনতে হবে না।
-তাই, আমাকে একটিবার পরিচয়
করিয়ে দিলে'না যে।
-দরকার নেই, পরে পরিচয় করে দিবো।
-আচ্ছা হাওয়া, তোর চোখে জল কেন রে?
-কই না তো। (চোখের কোনে আসা একটু জল মুছে নেয় হাওয়া।)
-এই মিথ্যা বলছিস কেন? কি কথা বললি বল আনিছের সঙ্গে বল।
-পরে বলবো এখন বাসায় চল।
-আচ্ছা চল।
-হু
-আচ্ছা হাওয়া, একটা কথা বলি।
-হুম বল
-তোরা কোনদিন এক হবি?
-সময় মতো।
-তাহলে আমি বেঁচে যাচ্ছি। হা হা,।
-হুম তুই বেঁচে যাবি হয়েছে।
-ডিভোর্সটা তাড়াতাড়ি দিয়ে দে। ভালোই হবে।
-তোর কষ্ট হবে'না।
-হতে পারে একটু তবে। পরে ঠিক হয়ে যাবে।
-আচ্ছা এবার বেশি কথা'না বলে বাসায় চল।
-আচ্ছা,,
হাওয়া মিস্টি হেঁসে রিফাতের হাতটা ধরে নেয়। হাওয়া প্রতীঙ্গা করে এই হাতটি আর কখনো ছারবো'না।
-এই এভাবে হাতটা ধরলি কেন? (রিফাত)
-ইচ্ছে হয়েছে তাই,
হাওয়া রিফাতের হাতটা শক্ত করে ধরে হিরহির করে টেনে নিয়ে যায়। সিয়েন্জি ভারা করে বাসায় ফিরে আসে। সন্ধ্যার দিকে।
সন্ধ্যায় ফিরে এসে আম্মুকে সাহায্য করে হাওয়া রাতের ভাত তরকারি রান্না করার জন্য। রিফাতের আম্মু হাওয়াকে বলে উঠে,
-হাওয়া মা, কোথায় গিয়েছিলে তোমরা?
-এই তো মা, বাইরে একটু ঘুরতে গিয়েছিলাম।
-ওহ আচ্ছা ভালো। মাঝে মাঝে একটু ঘুরতে যেও। মনটা ভালো থাকবে।
-হুম
হাওয়া তার শাশুড়ির সঙ্গে গল্প করতে থাকে। আর ভাত তরকারি রান্না করতে থাকে। রিফাতের আম্মু হাওয়াকে একেবারে নিজের মেয়ের মতো ভালোবাসতে শুরু করছে।
এদিকে রিফাত রুমের মধ্যে বসে আছে। রাত প্রায় আটটা বেজে গেছে। মাগরিবের আজান দিয়েছে, রিফাত মসজিদে নামাজ পড়ার জন্য চলে যায়।
রিফাত নামাজ পড়ে এসে দেখে, হাওয়া ভাত তরকারি রিফাতের রুমে নিয়ে এসেছে, তা দেখে রিফাত হাওয়াকে ডাকতে শুরু করে।
-এই হাওয়া কোথায় তুই।
হাওয়া কোথার থেকে যেন রুমে চলে আসে।
-এই চিল্লাচ্ছিস কেন? এই তো আমি!
-এই আমি কখন চিল্লাইলাম। ভাত তরকারি রুমে এনেছিস কেন?
-ইচ্ছে হয়েছে তাই।
-ইচ্ছে হলেই কি নিয়ে আসতে হবে?
-তোকে খাইয়ে দিবো তাই। (মিস্টি হেঁসে)
রিফাত এবার হাওয়ার মুখের দিকে
অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।
-আরে বাহ সত্যি নাকি?
-হুম সত্যি।
-দরকার নেই, তোর মতো পেত্নীর হাত থেকে খাবার খাওয়ার।
-ওই বেশি কথা বলবি না। টুপিটা আলমারিতে রেখে মেঝেতে এসে বস।
-আচ্ছা ঠিক আছে।
রিফাত মাথার টুপিটা খুলে আলমারিতে রেখে আসে। তারপর মেঝেতে বসে পরে।
-হাওয়া আজকে কি রান্না হয়েছে?
-পুঁটিমাছের ঝোল।
-ছিঃ আমার একদম ভালো লাগে'না এইসব।
-কেন।
-এমনিতেই ছোট্ট থেকেই ভালো লাগেনা এইসব খেতে।
-ওহ আচ্ছা তাহলে আজকে খেয়ে দেখ।
-দরকার নেই।
-আমি খাইয়ে দিলে খাবি'তো?
-হু, না খাবো না। তোর মতো পেত্নীর হাত থেকে একদম'না।
-ওই সবসময় আমাকে পেত্নী বলিস কেন রে?
-ভালো লাগে তাই।
হাওয়া ভাত মাখিয়ে রিফাতের মুখের কাছে ভাত নিয়ে যায়। রিফাত বলে উঠে।
-ওই আমাকে জোর করে খাওয়াতে চাইছিস নাকি?
-হ্যাঁ
হাওয়া হ্যাঁ বলেই রিফাতের মুখে ভাত ডুকে দেয়। রিফাত চিবোতে পাচ্ছে না। তা দেখে হাওয়া হেঁসেই যাচ্ছে। কোনোরকমে ভাতটা খেয়ে। হাওয়াকে বলে উঠে রিফাত।
-এই তোকে' আমি।
-কি
-গলার মধ্যে আটকে গেছিলো আর তুই বলছিস কি। যদি মরে যেতাম। (কথা গুলো বলে রিফাত কাশি দিতে শুরু করে)
-এই রিফাত কি হয়েছে তোর, দেখি দেখি। (হাওয়া রিফাতের মুখে পানির গাল্সটা লেগে দেয়। রিফাত পানিটা খেয়ে নেয় এক ঢুকে।,)
-রিফাত এবার ঠিক আছিস তো?
-হু
রিফাত অথবা হাওয়া এবার কোনো কথা বলে না। হাওয়া রিফাতকে খাইয়ে দিচ্ছে শান্ত ভাবে। রিফাত হাওয়ার চোখের দিকে তাকিয়ে আছে। রিফাত মনে মনে ভাবতে থাকে। এই ভাবে যদি সারাজীবন খাইয়ে দিতো পাগলীটা।
হাওয়ার হাতে জাদু আছে বলতেই হবে। রিফাতের অপছন্দের খাবারটা খাইয়ে দিচ্ছে। তবে রিফাত তা টেরও পাচ্ছে'না। রিফাতের খাওয়া শেষে হাওয়া হেঁসে উঠে।
-হিহিহিহি
-এই পেত্নী হাঁসছিস কেন?
-তুই যে বললি। তুই নাকি পুঁটিরমাছ খাস'না। তাহলে আমার হাত দিয়ে খেলি কেন? (কথাগুলো বলে হাওয়া হেঁসেই যাচ্ছে।)
-ওহ তাই তো। ওই পাজি,
-ওই আমি পাজি না ওকে, তুই একটা আস্ত বোকা।
রিফাত চুপ করে বসে আছে।
আর এদিকে হাওয়া হেঁসেই যাচ্ছে।
(চলবে?)
একট টুকরো চোখের জল! পর্ব-০৯ একট টুকরো চোখের জল! পর্ব-০৯ Reviewed by গল্প প্রেমিক on 1:32 PM Rating: 5

No comments

হৃদয়স্পর্শী গল্প

হৃদয়স্পর্শী গল্প