এক টুকরো চোখের জল! পর্ব-১২

গল্পঃ #এক_টুকরো_চোখের_জল
  (পর্ব-১২)
রিফাত আনিছের সঙ্গে কথা বলে বিকেলে দেখা করার জন্য। রিফাত হাওয়াকে ভালোবাসে, বাট হাওয়াতো রিফাতকে ভালোবাসে'না। তাই রিফাত চায় হাওয়া আর অনিছের মিল করিয়ে দিতে। রিফাতের একটু কষ্ট হবে' এতে'কোনো সন্দেহ নেই।তবে বাস্তব'টা তো মেনে নিতেই হবে।
.
.
হাওয়া ট্রেতে করে রিফাতের জন্য চা-নিয়ে আসে। হাওয়া রুমে এসেই রিফাতকে বলে উঠে।
-এই রিফাত কি ভাবছিস রে? আর কখন আসলি।
-এই তো একটু আগে।
-এতোক্ষণ কি করছিলে বাইরে?
-নামাজ পড়ে, বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিচ্ছিলাম।
-ওহ আচ্ছা।
রিফাত হাওয়ার চোখের দিকে তাকিয়ে মুচকি হেঁসে বলে।
-হাওয়া,
-হুম, বল।
-রাগ কমেছে?
-কিসের রাগ?
-না, মানে রাতে যে রাগ দেখালি তাই বলছি।
-সরি রে, মাঝে মাঝে মাথা ঠিক থাকে'না আমাকে ক্ষমা করে দিস।
-আরে ধুর ক্ষমার কথা বলছিস কেন? আচ্ছা তোদের মধ্যে কি ঝগড়া হয়েছে?
-হুম
-চিন্তা করিস'না রে সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে।
-,,,,,,,,,,
হাওয়া রিফাতের চোখের দিকে তাকিয়ে মুচকি হাঁসি দিয়ে বলে উঠে।
-এই রিফাত কয়টা বাজে খেয়াল করেছিস?
-কয়'টা আর বাজবে আটটার মতো?
-গাধা সকাল দশ'টা বাজে এখন।
-কিহহ্
-হ্যাঁ
-এতো সকাল হলো কেমনে রে। আর তুই তাহলে চা-বানিয়ে এনেছিস কেন?
চায়ের কাপটা ট্রে'তে রেখে কথাগুলো বলে রিফাত।
-গাধা বেশি কথা না বলে, চল সকালের নাস্তা করে নিবি!!
-আচ্ছা চল।
বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতে দিতে এতোটা সময় চলে গেছে খেয়াল করেনি রিফাত। হাওয়ার সঙ্গে খাবার টেবিলে যায় রিফাত। হাওয়া রিফাতকে রুটি আর আলুভাজি খেতে দেয়। রিফাত হাওয়াকে বলে উঠে।
-তুই খেয়েছিস?
-হ্যাঁ অনেক আগে খেয়েছি।
-ওহ্, আচ্ছা আব্বু আম্মু খেয়েছে?
-হ্যাঁ, বাবা অনেক আগে সকালের নাস্তা খেয়ে অফিসে চলে গেছে। আর মা নাস্তা খেয়ে রুমে সুয়ে আছে।
-তুই অনেক ভালো'রে। তুই আমার কাছে থাকলে অনেক লাকি মনে করতাম নিজেকে। এতোকিছু রান্না করতে পারিস। কথাগুলো বলে রিফাত মিস্টি হেঁসে উঠে।
এদিকে হাওয়া নিজের রাগ চাপিয়ে বলে।
-ওই গাধা এইসব কখনো ভাববি না। আর শোন একটা চাকরি জোগার কর। বাবার উপর দিয়ে আর কতদিন চলবি। বাবা-মা তো বৃদ্ধ হয়ে যাচ্ছে তবুও তোর ঙ্গান হচ্ছে'না।
-হুম,
-আর একটা কিউট মেয়েকে বিয়ে করে'নে।
-হুম, তুই খুজে দে,
-তোর বউ তুই খুজে'নে।
-এই তুই আগে ডিভোর্স দে, তারপর দেখা যাবে।
-ডিভোর্স তো দিবোই নিশ্চিত থাক।
-তা তো ভালো করে যানি রে,
রিফাত আর হাওয়া টুকটাক ঝগড়া করতে থাকে আর সকালের নাস্তা গুলো খেতে থাকে।
.
.
.
বিকেল পাঁচটার দিকে।
আনিছ অফিস থেকে ছুটি নেয়। আফিস থেকে ছুটি নিয়ে রিফাতের সঙ্গে দেখা করতে যায় আনিছ। স্কুলের বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছে রিফাত। স্কুল ছুটি হয়ে যাওয়ার কারণে কোনো স্টুডেন্ট দেখা যাচ্ছে 'না কয়েকজনকে ছারা। আনিছ মুখে রুমাল বেঁধে রিফাতের কাছে যায়। আনিছ রিফাতকে বলে উঠে।
-আসসালামু আলাইকুম,
-উলাইকুম আস্সালাম।
-আপনি কি রিফাত?
-হ্যাঁ আমি রিফাত।
-আমি আনিছ, আপনি কি'যেন বলতে চেয়েছিলেন। তারাতাড়ি বললে একটু ভালো হতো।
-আচ্ছা বলছি। চলুন না রেস্টুরেন্টে বসি।
-না দরকার নেই, এখানে বলতে পারেন।
রিফাত আনিছের মুখের দিকে তাকিয়ে বলে।
-আচ্ছা আপনি কেন মুখে রুমাল দিয়ে রেখেছেন?
-আসলে আমি একটু অসুস্থ তাই।
-ওহ আচ্ছা।
-হুম
-মুখের রুমালটা একটু খুলবেন দয়া করে। আপনাকে দেখতে এসেছি। কথা বলে চলে গেলে কেমন যানি লাগবে।
-মিস্টার রিফাত যা বলতে এসেছেন তাই শুধু বলুন। মুখ দেখানোর প্রয়োজন মনে করি'না আমি।
রিফাতের কেন যানি কন্ঠটা অনেক চিনা চিনা লাগতে শুরু করে। রিফাত এবার ভালোভাবে বুঝে যায় এটা আনিছ ছারা আর কেউ'না। রিফাত আনিছের মুখের কাপটা এক টা'নে খুলে দেয়।
মুখের কাপটা খুলে দিয়েই রিফাত আনিছকে জরীয়ে ধরে। আনিছ কিছু বুঝতে পারে না। তাহলে কি রিফাত চিনে ফেলেছে আনিছকে।
-আনিছ কোথায় ছিলি রে এতোদিন। অনেক মিছ করেছি তোকে আমি।
-,,,,,,,,
-কি ভেবেছিলি চিনবো'না আমি তোকে। সকালে তোর সঙ্গে কথা বলেই চিনি ফেলেছিলাম।
আনিছ এবার তুতলিয়ে বলে উঠে।
-আমাকে চিনলি কেমন করে'রে?
-বন্ধুকে কি ভুলা যায় বল। অনেক বড় হয়েগেছিস তো কি হয়েছে। তোর কন্ঠটা তো আগের মতোই আছে। রিফাত আনিছকে বুক থেকে সরিয়ে নেয়। আনিছ বলে উঠে।
-ভাই আমাকে ক্ষমা করেছিস তো?
-হুম অনেক আগে। চল এবার রেস্টুরেন্টে যাবি।
-নারে। কিছুক্ষণের জন্য অফিস থেকে ছুটি নিয়ে এসেছি। পরে একদিন চুটিয়ে আড্ডা দিবো তোর সঙ্গে।
-আচ্ছা ঠিক আছে। তবে কখন আসলি ঢাকায়।
-এই তো এক বছরের বেশি হয়ে গেছে।
-ওহ আচ্ছা তাহলে কি করিস এখন।
-একটা চাকরি করি। পরিবারের সকলে ঢাকা আছে এখন।
-ওহ আচ্ছা পরিবারের সকলে কেমন আছে।
-আলহামদুলিল্লাহ অনেক ভালো আছে।
-তোকে একটা কথা বলতে এসেছিলাম।
-কি বলবি আমি ভালো করেই যানি। হাওয়ার ব্যপারে তো।
-হ্যাঁ ঠিক ধরেছিস। হাওয়া তোকে অনেক ভালোবাসে রে। তোর জন্য অনেক পাগলামী করে মেয়েটা। ওকে নিয়ে আয় তুই।
-সরি রে পারবো'না। আমার বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে। এই মাসের ছয় তারিখে আমার বিয়ে। তোদের দাওয়াত রইলো। আসিস কেমন। আর আমি ভালোভাবে যানি তুই হাওয়াকে অনেক ভালোবাসিস।
-তোর ভুল ধারণা।
-আমার ভুল ধারণা না পাগল। তুই হাওয়াকে অনেক ভালোবাসিস। তোর আর হাওয়ার সম্পর্কে সবকিছু যানি আমি।
কথাগুলো বলে আনিছ চলে যায়। রিফাত কিছু'না বলে এক জায়গায় দাঁড়িয়ে আছে। আনিছের চলে যাওয়া দেখছে রিফাত।
.
.
আসলে আনিছ ভালোভাবে যানে। রিফাত হাওয়াকে ভালোবাসে। আনিছ রিফাত আর হাওয়ার ব্যপারে এই কয়েকটা দিন খাবর নিয়েছে। রিফাত আর হাওয়া যেই কলেজে লেখাপড়া করতো। মাস্টার ছাত্রদের কাছে খোঁজ'খবর নিয়ে অনেককিছু যেনেছে আনিছ। রিফাত আর হাওয়া বেস্ট ফেন্ড ছিলো। রিফাতের হাওয়া ছারা আর কোনো বন্ধু ছিলো'না।
.
.
.
সন্ধ্যার দিকে বাড়িতে ফিরে আসে রিফাত। বাসায় আসলে। হাওয়া আনিছকে বলে উঠে।
-আনিছ কোথায় গিয়েছিলিস রে?
-আনিছের কাছে।
(চলবে?)
এক টুকরো চোখের জল! পর্ব-১২ এক টুকরো চোখের জল! পর্ব-১২ Reviewed by গল্প প্রেমিক on 1:37 PM Rating: 5

No comments

হৃদয়স্পর্শী গল্প

হৃদয়স্পর্শী গল্প