সিনিয়র আপু

 

এক সিনিয়র আপুর সাথে প্রতিদিন কথা হতো। পরিচয়টা ছিল ফেসবুকে। মাঝে মাঝে রাতে তার সাথে আমার কলে কথা হতো। মানুষ এতোটা গুছিয়ে কথা বলতে পারে আমার জানা ছিলনা। আপুটা একটু শব্দ করে হাসতো। রীতিমতো সে আমার ক্রাস। কিন্তু তাকে আমি দেখিনি। শুধু তাকে শুনতাম।

আমি রোজ ছাদে গিয়ে যখন সিগারেটের ধোঁয়ায় আসক্ত থাকতাম তখনই সেই সিনিয়র আপু কল দিত। রোজ আমার সব গল্প শুনতো। রোজ আমার সাথে আকাশের চাদঁ দেখার গল্প শুনতো। আমার সুখের গল্প আমার কষ্টের গল্প সব শুনতো। একটা সময় আমি দেখলাম সেই মেয়েটা আমাকে পুরোটা বদলে দিয়েছে।

কিভাবে কি হয়ে গেল বুঝলাম না। আমার একটা প্রেম ছিল তার কথা আমি শেয়ার করি। শুরু থেকে শেষ অবদি পুরোটা তাকে বলি। সে শুধু বলেছিল যদি তোমার প্রেম ফিরে আসে কি করবে। আমিও কথার ছলে বলেছিলাম গ্রহন করবো । আপুটা সেদিন আমাকে বলেছিল আমি মন থেকে দোয়া করি সে যেন তোমার হয়। কিন্তু আমি ভাবিনি এত তারাতাড়ি এত কিছু হয়ে যাবে।

পরের দিন সন্ধ্যায় আপুটাকে কল করে বলি আজ আমার বিয়ে। সে বিশ্বাস করছিল না। আমি তাকে অনেক করে বলি আজ আমার বিয়ে। আমার কি করা উচিত। জবাবে বলেছিল যাকে ভালোবাসা যায় তাকে ফিরিয়ে দেওয়া যায় না। তাই গ্রহন করতে শিখো। আমাকে রাতে ছবি দিও তোমাদের বিয়ের।

কিন্তু কোথাও যেন মনে হয়েছিল সেই সিনিয়র আপু যদি আমাকে একটিবার বলত বিয়ে করোনা । তাহলে হয়তো ফিরে আসা যেত। মানুষ বলেনা ভালোবাসা হয়ে যায়। তেমনটাই শুধুমাত্র আমার প্রাক্তন প্রেমিকা এত দিন পর এত যুদ্ধের পরে আমার সাথে থাকতে চেয়েছে তাই তার ভালোবাসাক ছোট্ট না করে আমার ভিতরে তৈরী ভালোবাসাটাকে চেপে রেখে বিয়ে করি।

কিন্তু সেই কথা সেই হাসি। আমাকে এতোটা বদলে দেওয়া সবটাই তার জন্য। আজ আমার বউ হয়তো ভালো স্বামী পেয়েছে শুধু সেই অচেনা আপুটার জন্য। না হয় সে আমার লাইফে এসে দেখতো একটা উদ্দেশ্য ছাড়া মানুষ। যাকে সে গ্রহন করতোনা আমাকে পরিপাটি করে গুছিয়ে দিয়েছে।

সেদিন বিয়ের রাতে আমাদের বিয়ের ছবি দিয়েছিলাম। দেখে শুধু বলেছিল যদি জানতাম আমার দোয়া কবুল হবে তাহলে কখনোই আমি এই দোয়া করতাম না। ভালো থেকো। তারপর আমি তার ব্লক লিষ্টে।

রোজ রাতে ছাদে উঠি চাদঁ দেখি কিন্তু তার কথা আর শুনতে পাইনা। আসলে কিছু কিছু মানুষ হঠাৎ আসে হঠাৎ চলে যায় কিন্তু কিছু এমন স্মৃতি রেখে যায় চাইলেও তাদের ভোলা যায় না।