বউনামা! পর্ব-১২



#বউনামা_১২

(১)
নীরাকে ওদের বাড়ি দিয়ে আসার পর থেকে আমার জীবন টা দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। সকাল বেলা ঘুম ভাঙেই না আমার। এই নিয়ে প্রায় তিনদিন অফিসে দেরিতে পৌঁছেছি। আমি বসের নিতান্তই প্রিয়ভাজন হওয়ায় বকা থেকে বেঁচে গেছি। আর এদিকে নীরা যাওয়ার পর থেকে খাওয়াদাওয়ায় ভয়ংকর অনিয়ম ধরে গেছে। মনে হচ্ছে আবার সেই মেস জীবনে ফিরে গেছি।
সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠতে দেরি হয়ে যায়, সচরাচর নাস্তা ই করা হয়না, খাওয়া হয় একেবারে দুপুরবেলা। এজন্য আজ কয়দিন গ্যাস্ট্রিকের ও সমস্যা দেখা দিয়েছে। এর উপর রাতে রান্না করতে গিয়ে দুদিন তরকারী পুড়িয়ে ফেলেছি, তার উপর আমার যা রান্না! কখনো পরিমাণমত হলুদ হয়না, কখনো মরিচ হয়না, কখনো লবণ দিতেই ভুলে যাই! এজন্য রাতেও হোটেলে খাওয়া শুরু করেছি।
নীরাকে এসবের কিছুই জানাইনি, জানালে অকারণে টেনশনে পড়ে যাবে, গিলটি ফিল করবে। ওকে বলেছি আমি অসাধারণ রান্না করছি, ও ফিরলে ওকে রান্না করে খাওয়াবো। কিন্তু তখন আমার মুখে নুনবিহীন তরকারী। নীরা খানিকটা নিশ্চিন্ত হয় আমার কথায়, কিন্তু পুরোপুরি না, আমার অগোছালো স্বভাব জানা আছে ওর। এই কিছুদিনে আমি ভীষণ রকম প্রযুক্তির প্রেমে পড়ে গেছি। প্রযুক্তি সবকিছু এত সহজ করে দিয়েছে! যখন ইচ্ছা ভিডিও চ্যাটে দেখে নিচ্ছি ওকে। মনেই হয়না অনেক দূরে কোথাও রেখে এসেছি।
আর এদিকে ডেলিভারির তারিখ ঘনিয়ে আসছে। নীরা ভীষন রকম ভয় পাচ্ছে। এই সময়টাতে ওর পাশে থাকা টা প্রয়োজন। কিন্তু এই কয়দিনেই অফিসে প্রচণ্ড কাজ পড়ে গেছে। অফিসে কাজ শেষ করে এসে বাসায়ও কাজে লেগে থাকতে হচ্ছে। যত কাজই থাকুক, ওকে যখন মনে পড়ে যায়, আর কিছু আমাকে ধরে রাখতে পারেনা। সাথে সাথেই ফোন করে দিই।
-আসসালামু আলাইকুম।
-ওয়াআলাইকুম আসসালাম। ভাল আছ?
-জ্বি। তুমি?
-হ্যাঁ আলহামদুলিল্লাহ।
-কি খেয়েছো আজকে?
-মাছ রান্না করেছি।
-কিভাবে?
-কিভাবে কিভাবে জানি করে ফেলেছি। ভালই হয়েছে খেতে। চমৎকার টেস্ট!
এই কথাটা একটা ডাহা মিথ্যা। আমি মাছ রান্না করেছি ঠিকই, কিন্তু জঘন্য হয়েছে, কাঁচা মাছকে সিদ্ধ করে খাওয়ার মত ব্যাপার, মশলাপাতি কিছুই হয়নি।
-খুব টেনশন হচ্ছে।
-টেনশনের কিছু নেই। আল্লাহ ভরসা।
-তুমি কবে আসবা?
-এইতো ছুটি নিব কাল। তারপর। চিন্তা করোনা, আমি আগে আগেই চলে আসবে। পর্দার বাইরে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করব, একটু পর “ওঁয়া ওঁয়া” শোনা যাবে। ভেতর থেকে মহিলা বেরিয়ে এসে বলবে, “আপনি বাবা হইছেন!” আমি আলহামদুলিল্লাহ বলে মিষ্টি কিনতে চলে যাব।
-হিহি। এত সহজ সবকিছু না?
-ইনশাআল্লাহ সহজ হয়ে যাবে।
আমি নীরা কে ভরসা দিই। আবার নিজেই ভয় পাই। পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি সাহস দেয় ভীতু মানুষেরাই। তারা নিজের ভয়কে জয় করতে অন্যকে সাহস দেয়। এ এক জটিল সমীকরণ।
(২)
সকাল থেকে অফিসে প্রচণ্ড কাজের চাপ। নিঃশ্বাস ফেলার সময়টুকু পাচ্ছিনা। নীরার কাছে ফোন করা হয়নি একবারো। লাঞ্চ আওয়ারে লাঞ্চ ও করা হয়নি। এর মধ্যে নীরা একবার ফোন দিয়েছিল, ধরতে পারিনি, ব্যাক করার সময় ও পাইনি। প্রায় সন্ধ্যা হয়ে গেল সব কাজ মিটাতে মিটাতে। কাজের শেষ প্রান্তে ছিলাম প্রায়, তখনি সালমা আপুর ফোন। নীরার ব্যাথা উঠেছে, ইমিডিয়েটলি পারলে চলে আসতে।
-কিন্তু ওর ডেট তো আরো পরে।
-এগুলো একটু আগে পরে হয় ই। তুমি পারলে এখনি রওয়ানা দাও।
ডাক্তারের উপর প্রচণ্ড রাগ হল। তাদের এনালাইসিসে তবে কি ভুল আছে? ডেট বলে একটা, কিন্তু হয় আরেকটা। অফিসের কাজগুলো মূহুর্তে মিটিয়ে আমি আর বাসায় না গিয়েই বাড়ির উদ্দেশ্যে বাস ধরলাম।
সারাদিনে কিছু খাওয়াদাওয়া হয়নি, এর মধ্যে মাথার উপর এই প্রকাণ্ড দুঃশ্চিন্তা এসে ভর করল। একটু পরপর ফোন দিতে লাগলাম। ওদিক থেকে কখনো ফোন ধরে, কখনোবা ধরেনা। বাসের গতিও যেন আজ কমে গেছে। কেমন আস্তে আস্তে এগুচ্ছে, খরগোশ আর কচ্ছপের গল্পটা মনে হল। “স্লো এন্ড স্টেডি উইন্স দ্যা রেস” কিন্তু এখানে তো স্লো হলে চলছে না। ওদিকে নীরার একটা মেন্টাল সাপোর্টের জন্য হলেও আমার প্রয়োজন আছে।
এত দুঃশ্চিন্তার ভিড়েও আমার মনে কেমন স্বপ্নেরা উঁকি মারতে লাগল। চোখ বুঝলেই আমি দেখি একটি শিশুর হাসি, তার ছোট ছোট দুটি হাত আমার আঙুল চেপে ধরেছে! আমি শুনি একটি ছোট্ট কণ্ঠের “আব্বু” ডাক! আমি দেখি একটি শিশুর তুলতুলে গাল, সে গালে চুমু খাই পরম আদরে। দেখি বাবা “আব্বু” বলোতো আবার… এবার সে আমার দিকে নিশ্চুপ তাকিয়ে থাকে। মুখ খুলতেই সে কেমন একটা শব্দ করে, সেটা অনেকটা ফোনের রিংটোনের মত। ঘোর কাটতেই দেখি, ফোনে রিংটোন বাজছে। সালমা আপু ফোন করেছে। এই ফোনটা আমার কাছে এখন ভীষন রকম ভীতিকর একটা বস্তুতে পরিণত হয়েছে, কখন যে কি সংবাদ আসে!
-নীরার অবস্থা ভাল না। হসপিটালাইজড করেছি। তুমি কোথায়?
আপুর এটুকু কথা শোনার পর আমার আর উত্তরটি দেয়ার শক্তি রইল না। আমার ইচ্ছে হল বাস থেকে নেমে দৌড়ে চলে যাই। প্রচণ্ড দুঃশ্চিন্তায় স্থির থাকা যায়না। বাসে স্থির হয়ে বসে থাকায় দুঃশ্চিন্তা বাড়ছে, গাড়ি চলছে, তাও মনে হচ্ছে এগুচ্ছি না। মনে হচ্ছে দৌড়ালে তাড়াতাড়ি পৌঁছাতে পারব। নিজের উপর খুব রাগ হচ্ছে, আমাকে আগেই বাড়ি চলে যাওয়া উচিত ছিল। কয়েকবার করে ফোন করলাম, নীরার সাথে কথা বলা যাবে কিনা জিজ্ঞেস করলাম। কিন্তু নীরা কথা বলার অবস্থায় নেই।
এদিকে গাড়ি টা মনে হচ্ছে সম্পূর্ণ স্থির। প্রচণ্ড রাগ উঠে ড্রাইভারের সাথে একদফা ঝগড়া করে ফেললাম। বাসের সবাই বোধহয় আমাকে উন্মাদ ভাবছে, উন্মাদের চেয়ে উন্নত অবস্থায় নেই আমি। সারাদিনে কিছু খাওয়া হয়নি, সারাদিন অফিসে কাজ করে ঐ অবস্থায়ই বাসে উঠেছি, এখন আবার এই সংবাদ, সব মিলিয়ে আমাকে উন্মাদ লাগছিল। আমি সিটে শান্ত হয়ে বসার চেষ্টা করলাম। মেজাজা ঠান্ডা করার অনেক সাইকোলজিকাল উপায় আছে, তার মধ্যে একটি হচ্ছে উলটো করে সংখ্যা গোণা, অর্থাৎ একশো থেকে শুরু করে এক পর্যন্ত। সেটা বাকি সবার সাইকোলজি হতে পারে, কিন্তু আমার সাইকোলজি আমি জানি। আমি বজ্রের মত কঠিন অবস্থায় থাকলেও একটি মুখের হাসি কল্পনা করলেই সম্পূর্ণ গলে যাই। চোখ বন্ধ করে সেই মুখটা খুঁজতে লাগলাম। এভাবেই কেটে গেল কিছুক্ষণ। বাস শ্লথ গতিতে চলছে। মানুষ যখন কি করা উচিত বুঝতে পারেনা, কিংবা কিছু করার থাকেনা, তখন সে নিঃসাড় হয়ে পড়ে থাকে। আমিও ওভাবে পড়ে রইলাম। সম্বিত ফিরল আরেকটি ফোনকলে!
(৩)
ঐ ফোনটি কে করেছিল, সে কি কোন পুরুষ ছিল, নাকি নারী ছিল সেটিও আমার মনে নেই। শুধু এটুকু মনে আছে, সে বলেছে, “তুমি বাবা হয়েছো!” আমি জানিনা বাবা হওয়ার খবরে কেমন রিয়েকশন হওয়া উচিত, আমি আনন্দিত ছিলাম, ভীষণ আনন্দিত ছিলাম! অতি শোকে কিংবা অতি আনন্দে মানুষ নির্বাক হয়ে যায়। আমি “আলহামদুলিল্লাহ!” টুকুও উচ্চারণ করতে পারছিলাম না। যেভাবে ছিলাম, ঠিক সেভাবেই পড়ে রইলাম।
একটু পর খেয়াল হল, আমার ছেলে সন্তান হয়েছে নাকি মেয়ে সন্তান, সেটা তো বলেনি! অবাক হয়ে গেলাম। সবসময় দেখেছি সন্তান হওয়ার খবর দেয় এভাবে, “তোমার ছেলে হয়েছে!” কিংবা “তোমার মেয়ে হয়েছে!” অথচ আমাকে বলেছে, “তুমি বাবা হয়েছো!” আমি তড়িঘড়ি করে ফোন করলাম মায়ের কাছে। মা ফোন ধরল না, বাবাকে ফোন দিলাম, বাবাও ফোন ধরলেন না। শেষে আবার সালমা আপুকে ফোন দিতে হল।
-আপু! আমার ছেলে হয়েছে নাকি মেয়ে হয়েছে?
আপু আমার প্রশ্ন শুনেই হেসে দিলেন। এবার আমার নিজের কাছেও অদ্ভুত লাগছে, প্রশ্নটা সাজানো হয়নি সুন্দর ভাবে। তাই আবার সাজিয়ে বললাম,
-আপু, বাবু টা ছেলে না মেয়ে?
-বলা যাবেনা তোমাকে। তুমি তো সারপ্রাইজ চাইছো, সারপ্রাইজ ই থাকুক। এখানে আসো, তারপর জানবা।
এই জিনিসটা বড্ড বাড়াবাড়ি হয়ে যাচ্ছে। পরীক্ষার রেজাল্ট প্রকাশ হয়েছে, আমি ইন্টারনেটে বারবার সার্চ করছি, অথচ তারা বলছে তুমি এসে খাতা দেখে যাও। বিষয়টা কেমন বিরক্তিকর! এর মধ্যে আমি কয়েকজন কে ফোন করে ফেলেছি। সবার একই উত্তর! আশ্চর্য, সবাইকে পড়িয়ে দেয়া হয়েছে। মেজাজ তিরিক্ষ্ণি হয়ে গেল। এবার আমার পাশের সিটের ভদ্রলোকের সাথে ঝগড়া করে ফেললাম।
-আপনার সিটে আপনার জায়গা হচ্ছে না? আমার সিটেরও অর্ধেক জায়গা নিয়ে নিছেন, কি শুরু করসেন মিয়া?
-ভাই। দেখেন ই তো আমার শরীর, একটু জায়গা বেশি লাগে। আপনি চিকন মানুষ, আপনার তো এত জায়গা লাগতেসে না।
-আমার জায়গা লাগুক না লাগুক, আমার সিট আমারই। আমি সমাজতন্ত্র মানিনা, অন্য কোথাও গিয়ে এসব কথা বলেন যান।
আমার কথা শুনে ভদ্রলোক চুপসে গেলেন। আর নিজেকে গুটিয়ে নিয়ে নিজের সিটের মধ্যে এডজাস্ট করার প্রাণান্তর চেষ্টা করলেন, কিন্তু সমর্থ হলেন না। তার পশ্চাৎদেশের কিছু অংশ আমার সিটে এসে পড়ল ই। আমি আর ওদিকে খেয়াল রাখলাম না, এমনিতেই প্রচণ্ড প্যারায় আছি সম্পূর্ণ দিন। বাস থেকে নামলাম প্রায় রাত দশটায়।
বাস থেকে নেমে রিকশা নিয়ে হাসপাতালের দিকে ছুটলাম। আজকে পুরো পৃথিবী টাকে কেমন সন্তান সন্তান বলে মনে হচ্ছে। পিতৃত্বের সাথে সাথে এক অসাধারণ দায়িত্ববোধ তৈরি হয়ে গেছে এই কিছুক্ষণেই। রাস্তায় যত্রতত্র ময়লা, কলার খোসা দেখেও মায়া হচ্ছে, রাস্তা টাকে মনে হচ্ছে সন্তান যে কিনা আবর্জনার জন্য নিঃশ্বাস নিতে পারছেনা। রিকশা থেকে নামার পর রিকশাওয়ালা স্বাভাবিক ভাড়ার চেয়ে পাঁচ টাকা বেশি চাইল, রিকশাওয়ালাকেও মনে হল সন্তানতূল্য, মায়া হল আমার। দশ টাকার জায়গায় বিশ টাকা ভাড়া দিলাম। রিকশাওয়ালা খুশি মনে চলে গেল।
(৪)
হাসপাতালের গেটে দাঁড়িয়ে অন্যরকম একটা অনুভূতি হল! এ অনুভূতি সবচেয়ে আলাদা। হাসপাতাল টাকে মনে হল ভীষন রকম আপন। আমার টাকা থাকলে বোধহয় হাসপাতালের নামে বড় মাপের ডোনেশন দিয়ে দিতাম!
হাসপাতালের সিড়ি বেয়ে উঠছি আর মনে হচ্ছে ছোট ছোট পায়ে একটা বাচ্চা আমার দিকে এগিয়ে আসছে, আমি গিয়ে পোঁছাব, হাত বাড়াব আর সে ঝাঁপিয়ে পড়বে আমার কোলে। নীরাকে যে রুমে রাখা হয়েছে তার সামনে প্রচণ্ড ভীড়, সবাই নতুন অতিথির সাথে সাক্ষাত করতে এসেছে। রুমে ঢুকতেই একটা শব্দ কানে এল, “মেয়ে!” কে বলল ঠিক জানিনা। তবে বুঝতে পারলাম আমি একটি মেয়ে সন্তানের বাবা হয়েছি!
আমি ঢুকতেই মা কাঁথায় মুড়ানো বাবু টাকে আমার কাছে নিয়ে এলেন। আমার জানা ছিলনা সদ্য জন্ম নেয়া একটা বাচ্চাকে কিভাবে কোলে নিতে হয়, মা আমায় শিখিয়ে দিলেন। আমি কোলে নিয়ে ছোট্ট মুখটার দিকে তাকিয়েই উচ্চারণ করলাম, “মাশাআল্লাহ!” সবাই সমস্বরে বলে উঠল আলহামদুলিল্লাহ। তাকিয়ে দেখি বাবা আমার দিকে তাকিয়ে আছেন একদৃষ্টে। বাবার মনের অবস্থা টা অনুমান করতে পারছি। আজ থেকে পঁচিশ বছর আগে বাবা এভাবেই আমাকে কোলে নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন। আর আজ তাঁর কোলের সেই ছোট্ট ছেলেটি সন্তান কোলে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। এ অনুভূতি অন্যরকম। আমি এগিয়ে গিয়ে বাবাকে বললাম দোয়া করে দিতে। বাবা দোয়া করে দিলেন। আমি মেয়েকে মায়ের কোলে দিয়ে নীরার পাশে গিয়ে বসলাম। নীরার চোখ ছলছল করছে। আমি ওর হাত চেপে ধরলাম, ফিসফিসিয়ে বললাম, “ধন্যবাদ!” নীরা বলল, “কেন?”
আমি বললাম রাসূল(স) বলেছেন, “ঐ স্ত্রী স্বামীর জন্য অধিক বরকতময়, যার দেন-মোহরের পরিমান কম হয় এবং যার প্রথম সন্তান হয় মেয়ে”। নীরার চোখ বেয়ে একফোটা পানি গড়িয়ে পড়ল। আমি আশেপাশের সব বেমালুম ভুলে গেলাম। ভরা মজলিসে নীরার কপালে চুমু দিয়ে দিলাম। সবাই অন্যমনস্ক হওয়ার ভান করল। মা এসে আমার কোলে মেয়েকে দিয়ে গেলেন। আমি ঘুমন্ত ছোট্ট মুখটার দিকে তাকিয়ে বললাম, “আব্বু বলো আব্বু!” নীরা হেসে দিল। মুখে বলল, “কত কষ্ট হয়েছে জানো?” আমি হাসিমুখে বললাম, “আসছে বছর আবার হবে!” নীরা আবারো হেসে দিল, শুভ্র সুন্দর এক হাসি। আমাদের দুজনের হাসির ছোঁয়া ছোট্ট প্রানটায়ও বোধহয় লাগল। তার ছোট্ট ঠোঁটেও একটুখানি হাসি ফুটল। সে হাসি হৃদয় প্রশান্ত করা হাসি! মনের গ্যালারি তে ছবি হয়ে জমা হয়ে রইল সে হাসি। লোকে বলে দুজন থেকে তিনজন হলাম, আমি বলি তিনে মিলে এক হলাম!
(চলবে.........???)
বউনামা! পর্ব-১২ বউনামা! পর্ব-১২ Reviewed by গল্প প্রেমিক on 6:01 PM Rating: 5

No comments

হৃদয়স্পর্শী গল্প

হৃদয়স্পর্শী গল্প