এ আবার কেমন বউ! পর্ব-০৬ (শেষ পর্ব)

গল্পঃ #এ_আবার_কেমন_বউ
(শেষ পর্ব-৬)
একদিন হঠাৎ করেই আসাদের ফোনে কল আসে। রাইসাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। পেটে নাকি ব্যথ্যা করছিলো। আসাদ অফিসের সব কার্জকর্ম ফেলে রেখে। হাসপাতালে চলে যায়। গিয়ে দেখে বোন আর আম্মু রুমের বাইরে দাঁড়িয়ে আছে। বোনকে আসাদ জিগ্যেস করে। মিতু রাইসার কি হয়েছে।
-হঠাৎ করেই পেটে ব্যথ্যা। (ওটি)O.T তে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বাবু হবে।
-মানে?
কথাটা শুনার পর আসাদের একটু আনন্দ আর একটু ভয় লাগতে শুরু করে। অবশেষে অনেকক্ষণ পর ডাক্তার (ওটি) থেকে বের হয়ে আসে। কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে ডক্টর বলে উঠে।
-সরি আপনার স্ত্রীকে বাঁচানো যাইনি। তবে, আপনি মেয়ের বাবা হয়েছেন। (বলে আসাদের কাঁধে হাত রাখে ডাক্তার)
আসাদ অনেক রেগে গিয়ে।
ডাক্তারের কলার ধরে।
-কি সব, বলছেন।
ডাক্তার কিছু বলছে না। ওখান থেকে চলে যায়। আসাদ কান্না করতে থাকে, ভিতরে গিয়ে দেখে।
পাগলিটাকে সাদা কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখা
হয়েছে। তার পার্শে ফুটফুটে একটা মেয়ে
দোলনায় সুয়ে আছে।
আসাদ রাইসার কাছে গিয়ে কাপড়টা সরে দিয়ে কান্না করতে থাকে।
পাগলী পাগলী বলে চিৎকার দিতে থাকে। তবে এই পাগলী কোনো সারা দিচ্ছে না।
এই পাগলীটা না ফেরার দেশে চলে গেছে। আসাদ মেনে নিতে পাচ্ছে না। কিছুতেই মেনে নিতে পাচ্ছে না। তার পাগলীটা তাকে ছেরে চলে গেছে। কিছুক্ষণ পর, আসাদের বোন মিতু আর আম্মু ভিতরে ঢুকে।
তাদের চখে জল টলমল করছে। আসাদের
পাগলামি দেখে কান্না করে দেয় আম্মু আর
বোন।
মিতু খেয়াল করে দেখে ফুটফুটে একটা মেয়ে কান্না করছে। মিতু মেয়েটাকে কোলে তুলে নেয়।
এদিকে রাইসাকে জরীয়ে ধরে, আসাদ কান্না করতে থাকে। পাগলী তুমি কথা বলছো না কেন? এই দেখো আমাদের কত্ত সুন্দর বাবু হয়েছে। একদম তোমার মতো। পাগলী কথা বলছো না কেন? (বলে চিৎকার করতে থাকে আসাদ।)
-পাগলী আমাদের মেয়েটার নাম
রাখবে না বলো? উঠো প্লিজ।
আসাদ কান্না করে যাচ্ছে। আর পাগলামি করে যাচ্ছ। তবে রাইসা না ফেরার দেশে চলে গেছে। সেখান থেকে চাইলেও ফেরত আনা যায় না।
রাইসার জানাজা শেষে। রাইসাকে কবর স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়। আসাদ পাগলামী করতে থাকে। অবশেষে রাইসাকে মাটি দেওয়া হয়। সকলে মাটি দিয়ে চলে গেলে। আসাদ কবর স্থানে পরে থাকে।
বৃষ্টি চলে এসেছে আসাদের চখ বেয়ে
বেয়ে বৃষ্টি ঝরে যাচ্ছে।
আসাদ পাগল হয়ে যাচ্ছে রাইসার জন্য।
এমন করে চলে গেলে কেন। পাগলী।
-এই পাগল কান্না করো কেন?
-রাইসা তুমি?
-হু, আমি
-কোথায় গিয়েছিলে বলো। আমার খুব কষ্ট হচ্ছে তোমাকে ছারা।
-পাগল একটা বাসায় যাও বলছি।
-না, আমি যাবো না। তোমার কাছে থাকবো। তুমি আমাকে ছেরে আর কোথাও যাবে না।
-আরে পাগল, তোমার সঙ্গে সব সময় আছি আমি। তোমার আর আমার একটা মেয়ে হয়েছে দেখেছো।
-হু, দেখেছি তো, একদম তোমার মতো হয়েছে, (বলে আসাদ পাগলদের মতো হেঁসে উঠে)
তারপর রাইসা কোথাও যেনো হারিয়ে যায়।
আসাদ পাগলের মতো চিৎকার করতে
থাকে। আর কান্না করতে থাকে।
-এই পাগল কান্না করছো কেন?
-,,,,,,,,,(ঘুমিয়ে)
-এই উঠো বলছি
-,,,,,,,,,
আসাদ চিৎকার দিয়ে উঠে।
-আমি কোথায়?
-কেন, কোথায় থাকার কথা।
-কবর স্থানে।
-মানে
-তুমি যে, মারা গেলে।
-মানে, আমি মারা গেলাম কবে? আমাকে মেরে ফেলতে চাও নাকি তুমি?(রেগে)
-তুমি মারা যাওনাই।
-মানে
-তোমাকে যে কবর দিয়ে আসলাম।
এবার রাইসা অনেক রেগে গিয়ে, আসাদের
দিকে তাকিয়ে আছে। রেগে আগুন হয়ে গেছে পুরাই।
-তোকে আমি।
-কিহহহ
রাইসা আসাদের বুকে কিল ঘুশি দিতে থাকে।
হ্যাঁ আসাদ এতক্ষণ স্বপ্ন দেখছিলো।
তাদের মেয়ে হয়েছে তবে মা-মেয়ে দুজনে সুস্থ আছে।
রাইসা পুরাপুরি সুস্থ এখন। আগের মতো আর পাগলামী করে না। এদিকে বাবা-মার কান্ড দেখে। পচকু মেয়েটা হিহিহি করে হেঁসে যাচ্ছে দোলনায় সুয়ে সুয়ে। হাত তালি দিচ্ছে, ছোট্ট ছোট্ট হাত গুলো দিয়ে।
রাইসা আর আসাদ দুষ্টুমি করে, তাদের পচকু মেয়েটাকে কোলে তুলে নেয়। দুজনে মেয়েটার দুইগালে চুমু দিয়ে দেয়। মেয়েটার নাম রেখেছে। আনহা। আনহার বয়স প্রায় ১বছর হয়েছে।
মেয়েটা হেঁসে উঠলে, দু'জনের মুখে হাঁসি ফোটে।
ফোকলা দাঁতের হাঁসি দেয় পচকু মেয়েটা।
...........................সমাপ্ত..................................
এ আবার কেমন বউ! পর্ব-০৬ (শেষ পর্ব) এ আবার কেমন বউ! পর্ব-০৬ (শেষ পর্ব) Reviewed by গল্প প্রেমিক on 10:16 AM Rating: 5

No comments

হৃদয়স্পর্শী গল্প

হৃদয়স্পর্শী গল্প