বুকের ভিতর রাখবো তোকে! পর্ব-০৩

#বুকের ভিতর রাখবো তোকে💞

অরণ্য চলে গেল। কিন্তুু পাখির মাথায় তো কিছুই ঢুকল না।
পরেরদিন সকালে পাখি কলেজে গেল। কলেজের বারান্দায় যাওয়ার পথে পাখিকে নিয়ে কিছু বখাটে ছেলেরা আলোচনা করছে যা পাখি কিছুটা হলেও শুনতে পায়।
--দোস্ত দেখ মালটা কিন্তুু সেই। একদম খাসা মাল।
--আরে হ্যা দোস্ত বডিটা তো পুরাই চিকনি চামেলি।
পাখির এসব কথা সহ্য হচ্ছে না তাই তাড়াতাড়ি ওখান থেকে চলে আসতে চাইল কিন্তুু পাখির সামনে তিনটি বখাটে ছেলে হুমড়ি খেয়ে দাড়ায়।
-- এই যে চিকনি চামেলি কোথায় যাও। (১ম জন)
পাখি পাশ কেটে যাওয়ার সময় আরেকজন পথ আটকালো।
-- এভাবে চলে যাচ্ছো কেন আমাদের একটু সময় দিয়ে তারপর যাও। (২য় জন)
পাখি আবার পাশ কেটে যেতে নিলে আরেকটা বখাটে ছেলে পাখির হাত ধরে ফেলে।
--আপনাদের সমস্যাটা কি? আমার হাত ধরছেন কেন? আমাকে যেতে দিন প্লিজ।
--যাবে আগে আমাদের একটু সময় দেও।
--আমি কিন্তুু এখন চিতকার করে লোক জড়ো করব। ভালোয় ভালোয় বলছি আমার হাতটা ছাড়ুন।
পাখিকে আর কোনো কথা না বলতে দিয়ে ছেলেরা পাখির সাথে অসভ্যতামু করতে চাইল। দুইটা ছেলে পাখির দুই হাত টেনে দেয়ালে চেপে ধরে। এবং সেই বখাটে ছেলের লিডার পাখি কাছে আসতে থাকে এমন সময়ই কেউ একজন ছেলেটার কলার ধরে টেনে মাটিতে ফেলে দেয়। হ্যা ছেলেটা আর কেউ নয় অরণ্য।
--স্যার আপনি এখানে? আমাকে ক্ষমা করে দিন স্যার।
--তোকে ক্ষমা করলে তো আমার নিজের প্রতিই অন্যায় করা হয়। আমার কলিজার দিকে তুই হাত বাড়িয়েছিস এর জন্য তো তোকে শাস্তি পেতেই হবে৷
অরণ্য ছেলেদের লিডারটাকে ইচ্ছে মতো পিটায় আর বাকি ছেলেগুলো পালাতে চাইলে তাদের ধরেও পিটায়। সবাই অরণ্যকে কিছু বলে নি বরং আরোও উৎসাহিত করে এদের পিটানোর জন্য৷ বখাটে ছেলেদের সবাই ভয় পায়। তাই কেউ প্রতিবাদ করতে পারে নি। কিন্তুু অরণ্য আজ ওদের ইচ্ছে মতো শায়েস্তা করল। আর ঐদিকে পাখি তো ভয়ে কাঁদছে। অরণ্য যদি আরেকটু দেরি করত তাহলে হয়তোবা তার অনেক বড় ক্ষতি হয়ে যেত। পাখি সবার সামনেই দৌড়ে এসে অরণ্যকে জড়িয়ে ধরে। অরণ্য এটার জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিল না। অরণ্য রীতিমতো অবাক পাখির এই কান্ড দেখে। পাখি কাঁদতে কাঁদতে অরণ্যকে বলল
--স্যার আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। আজকে যদি আপনি ঠিক সময় না আসতেন তাহলে বোধয় এই জানোয়ার গুলো আমার সাথে...পাখি আর বলতে পারল না। অরণ্যকে এখনও জড়িয়ে ধরে সে কেঁদেই যাচ্ছে। অরণ্য পাখির মাথায় হাত বুলাতে লাগল যা দেখে পাখি অরণ্যের দিকে কান্না জড়িত চোখে তাকাল
--পাগলী মেয়ে একটা। আমি থাকতে তোমার কিছু হবে না। আমি সবসময় তোমার পাশে থাকব।
পাখি কিছুটা অবাক হলো অরণ্যের এই কথা শোনে। এখন পাখির হুস ফিরল। পাখি যে অরণ্যকে জড়িয়ে ধরে আছে আর সবাই যে তাদের দেখছে পাখি বুঝতে পারল। পাখি লজ্জায় মুহূর্তেই অরণ্যকে ছেড়ে দিয়ে কিছুটা দূরে গিয়ে দাঁড়াল। অরণ্য হেডস্যারকে উদ্দেশ্য করে বলল
--এই ছেলেগুলোকে যাতে এই কলেজে আমি নেক্সট টাইম না দেখি। এদের আজকেই বহিষ্কার করে দিবেন। It’s my order.
--জী স্যার আপনার কথা কি আমরা ফেলতে পারি। এখনি আমরা এই ছেলেদের কলেজ থেকে বিদায় করব।
অরণ্য এবার পাখিকে বলল
--পাখি তুমি তোমার ক্লাসে যাও।
--জী স্যার।
পাখি ক্লাসে যেতে যেতে ভাবতে লাগল
--আমি তো স্যারকে আমার নামটাও বলি নি । স্যার আমার নাম জানল কি করে! কি জানি কিছুই বুঝলাম না।



রাত ১১ টা। অরণ্য বেডরুমের বিছানায় শুয়ে আছে আর মনে মনে পাখির কথা ভাবছে।
--এই বোকা মেয়েটার মধ্যে কি আছে যে আমাকে বার বার ওর কাছেই টানে!
অরণ্য পাখির পুরো ডিটেইলস নিয়ে সাথে এক হাতে পাখির ছবি নিয়ে অপলক দৃষ্টিতে পাখির ছবির দিকে তাকিয়ে আছে।
অপরদিকে পাখি রান্না করছে আর অরণ্যের কথা ভাবছে।
--সত্যি স্যার আপনি খুব ভালো। প্রথমে আপনাকে ভুল বুঝলেও আমি এখন বুঝতে পারছি আপনি উপর দিক দিয়ে রাগী হলেও ভিতর দিকে ততটাই নরম। আরে! আমি স্যারের কথা এতো ভাবছি কেন! না না না.. বড়লোকদের কথা বেশী ভাবতে নেই। ওদের চেনা বড়ই মুশকিল। যেকোনো সময়ই খোলস পাল্টায়৷
এদিকে পাখির মা এসে দেখে পাখি রান্না সব পুড়িয়ে ফেলছে।
--ও পাখি তুই কি করছিস? রান্নাটা পুড়ে গেল রে।
--কি বলছো মা তুমি!
পাখি দেখল হ্যা সত্যি রান্নাটা পুড়ে গেছে৷
-- এখন কি করবি?
--আমি রান্না আবার বানাচ্ছি মা। তুমি যাও গিয়ে বাবার ঔষধ দাও৷ আচ্ছা মা ফুলি কি করছে?
--ও তো পড়ছে।
--ওহ। মা তুমি যাও আমি রান্নাটা করে আসছি।
পরেরদিন পাখি কলেজ যাওয়ার উদ্দেশ্যে রওনা হলো আর এমন সময় পাখির ফোনটা বেজে উঠল। পাখি দেখল একটা অচেনা নাম্বার থেকে কেউ ফোন করেছে।
#চলবে?
বুকের ভিতর রাখবো তোকে! পর্ব-০৩ বুকের ভিতর রাখবো তোকে! পর্ব-০৩ Reviewed by গল্প প্রেমিক on 1:47 PM Rating: 5

No comments

হৃদয়স্পর্শী গল্প

হৃদয়স্পর্শী গল্প