অহংকারী মেয়ে! পর্ব-০১

অহংকারী মেয়ে
এই ছোট লোকের বাচ্চা, ছ্যাচরা তুই আমার রুমে ডুকার সাহস কিভাবে পেলি?(এনি)
- তোমাকে চাচি আম্মা ডাকে(শান্ত)
- আমার রুমে ডুকলি কেন?
- স্যরি
- এই ছোট লোক তোর কি কখনো আক্কেল জ্ঞান হবে না? কারো রুমে প্রবেশ করতে হলে অনুমতি লাগে। তুই কি অনুমতি নিছিস?
- না
- তাহলে প্রবেশ করলি কেন?
- আর এমন হবে না..
- আমার সামনে থেকে যাহহ।
এই হচ্ছে এনি। মা-বাবার একমাত্র মেয়ে। এনি মেয়ে হিসাবে বদমেজাজি। বাকিটা কেমন সেটা আপনারা গল্পে দেখতে পারবেন।
আর শান্ত তার নামানুযায়ী খুবই শান্ত। শান্ত এতিমখানা তে বড় হয়। এতিমখানা থেকে এনির বাবা শান্তকে তাদের বাড়িতে নিয়ে আসে।
এনি আর শান্ত একই বয়সের। দুজন একই ক্লাসে পড়ালেখা করে।এনি শান্তকে সহ্য করতে পারে না। শান্ত যেনো এনির চোখের কাটা।
- মা আমাকে ডাকছো?(এনি)
- হ্যা(এনির মা)
- তুমি ডাকলে শান্তকে কেন আমার রুমে পাঠাতে হবে?
- কি হয়ছে?
- কি না হয়ছে বলো?
- কি হয়ছে সেটা তো বলবি
- জানো যে ওরে দেখলেই আমার গা জ্বলে তাও কেন এই ছোট লোকের বাচ্চাকে পাঠাও....
- এই চুপ কর। তুই কি সারাজীবন এমন ই থাকবি?
- হ্যা আমি এমন ই থাকবো। ওরে আমার সামনে আসতে না করবা বলে দিলাম।
- আচ্ছা শোন যেটার জন্য ডাকলাম
- হুম বলো..
- আজকে আমরা সবাই তোর বাবার বন্ধুর মেয়ের বিয়েতে যাবো
- আমরা সবাই মানে?
- হুমম সবাই
- কে কে?
- তোর বাবা আমি তুই আর শান্ত
- তাহলে আমি যাবো না
- কেন?
- শান্ত গেলে আমি যেতে পারবোনা।
- গাড়ির ড্রাইভার আজকে আসবেনা
- গাড়ির ড্রাইভার হিসাবে যাবে?
- হুম, গোসল করে রেডি হ
- ওকে।
বিয়ে বাড়িতে যাওয়ার পরে শান্ত মনে মনে ভাবতে থাকে এখানকার সবাই কত দামি দামি পোশাক পরে আছে আর আমি? আমাদের মতো মানুষকে এই পৃথিবীতে পাঠানো হয়েছে মনে হয় এনিদের মতো মানুষের গোলামি করার জন্য।
এসব ভাবতে ভাবতে মন খারাপ করে ক্রিস্টিয়ানা পেরির সেড সং লাগিয়ে গাড়িতে বসে থাকে।
কতক্ষণ পরে এনির বাবা গাড়ির কাছে এসে শান্তকে ডাক দেয়।
- জি আংকেল কিছু বলবেন?
- তুমি গাড়িতে বসে আছো কেনো?
- এমনি
- চলো
- কোথায়?
- বিয়ের অনুষ্টানে।
.
- না আমি যাবো না
- কেন?
- এমনি
- এনির ভয়ে?
- না আংকেল
- তোমার আন্টি আমাকে সবকিছু বলছে। বাবা সবকিছুতে একটু কষ্ট করতে হয়। তোমার কষ্ট না হয় একটু বেশি হলো, আর আমি আর তোমার আন্টি কিন্তু তোমাকে আমাদের সন্তানের মতো দেখি।
- জানি আংকেল
- তাহলে চলো
তখন শান্ত এনির বাবার সাথে ভিতরে যায়।
শান্ত সেখানে তার ক্লাসমেট কে দেখে কথা বলতেছে তখন এনি তাকে দেখে ফেলে।
এনি দোখার সাথে সাথে রাগে তার নাক মুখ লাল হয়ে যায়। এনি তখন মনে মনে ভাবে তাকে সবার সামনে লজ্জা দিতে হবে এই বলে শান্তর সামনে যায়।
শান্ত এনিকে দেখে তার ভিতর তখন হালকা ভয় কাজ করে।
- শান্ত এদিকে আসো(এনি)
- কিছু বলবা?(শান্ত)
- হুমম এই বলে তাকে আড়ালে নিয়ে যায়। কতক্ষণ পরে সেখান থেকে বের হয়ে আসে।
এনি শান্তকে সবার সামনে এনে ঠাস ঠাস করে গালে কয়েকটা থাপ্পর বসিয়ে দেয়।
সবাই তখন সব কিছু বাদ দিয়ে তাদের দিকে চেয়ে থাকে।
বাংলাদেশের শাস্ত্র মতে, একটি মেয়ের কিছু হলে তার পক্ষ ধরে যেমন ছেলেরা ছুটে আসে ঠিক তেমনি তার সময়ও এমন হলো।
কয়েকটা ছেলে শান্তকে ধাক্কা দিতে দিতে বাহির করে দেয়।
শান্ত তখন একটু শব্দ করে কান্না করে দেয়। শান্ত সে নিজেকে নিজে প্রশ্ন করতে থাকে, আমি কি কোন দোষ করেছিলাম? আমি তো দোষ করিনি তাহলে কেন আমাকে সবার সামনে এমন করলো।
আমি কি এনির কোনো রকম ক্ষতি করছি?
ওরে দেখলে তো আমার ভয় হয় । তাও কেন আমার সাথে এমনটা করলো। মা-বাবা নাই বলে হয়তো আজ এমন টা করলো।
এসব ভাবতে ভাবতে গাড়ির ভিতর ডুকে গ্লাসগুলো আটকিয়ে কান্না করতে থাকে।
প্রায় ৩০-৩৫ মিনিট পরে এনির বাবা শান্তর কাছে ছুটে আসে।
শান্ত কি হয়ছে? (এনির বাবা)
- চোখ মুখ হাত দিয়ে মুছে, কিছু না আংকেল
- এনি নাকি তোমাকে থাপ্পর দিছে?
- তা কিছু না আংকেল। আমাদের জন্মই তো মার খাওয়ার জন্য , কারণ আমরা তো এতিম
- বাবা এভাবে বলিস না , বাড়িতে যাওয়ার পর এর শেষটুকু দেখবো।
সন্ধ্যার দিকে সবাইকে নিয়ে শান্ত গাড়ির ড্রাইভিং করে বাসায় ফিরে।
বাসায় আসার পরে শান্ত কান্না করতে করতে শান্তর রুমে চলে যায়।
শান্ত রুমে গিয়ে দরজা আটকিয়ে কান্না করতে থাকে।
কতক্ষণ পরে এনির রুম থেকে চিল্লাচিল্লির আওয়াজ শোনা যাচ্ছে। এমন আওয়াজ শুনে শান্ত রুম থেকে বের হয়ে যেটা দেখলো তাতে সে বিশ্বাস করতে পারলো না.................
.
অহংকারী মেয়ে! পর্ব-০১ অহংকারী মেয়ে! পর্ব-০১ Reviewed by গল্প প্রেমিক on 2:29 PM Rating: 5

No comments

হৃদয়স্পর্শী গল্প

হৃদয়স্পর্শী গল্প